BRAKING NEWS

ট্রমা সেন্টার নয়, খোলা হয়েছে ট্রমা কেয়ার সেন্টার ঃ স্বাস্থ্য অধিকর্তা

শব্দের মোড়কে জালিয়াতি
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর৷৷ জিবি হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার নয়৷ খোলা হয়েছে ট্রমা কেয়ার সেন্টার৷ বুধবার একথা অকপটে জানালেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা জে কে দেববর্মা৷ তাতে মনে হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবায় শব্দের মোড়কে বিরাট জালিয়াতি করেছে রাজ্য সরকার৷
২০০৬-০৭ অর্থবছরে জিবি হাসপাতালে এক্সিডেন্ট এবং ট্রমা সেন্টার খোলার জন্য পূর্বোত্তর পরিষদ অর্থ বরাদ্দ করেছিল৷ দীর্ঘ ১০ বছর বাদে জিবি হাসপাতালে মঙ্গলবার ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছে ট্রমা সেন্টারের৷ কিন্তু, স্বাস্থ্য অধিকর্তা আজ জানিয়েছেন জিবি হাসপাতালে খোলা হয়েছে ট্রমা কেয়ার সেন্টার৷ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ণ উঠেছে, ট্রমা সেন্টার এবং ট্রমা কেয়ার সেন্টারের মধ্যে পার্থক্য কোথায় রয়েছে৷ এই প্রশ্ণের জবাবে স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, ট্রমা সেন্টার চালু করতে নিউরো সার্জন অবশ্যই প্রয়োজন৷ শুধু তাই নয়, প্রয়োজন নিউরো এনাস্থেটিকের৷ কিন্তু, আপাতত এই দুই বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি৷ তাই, এর নাম দেওয়া হয়েছে ট্রমা কেয়ার সেন্টার৷ এদিন তিনি আরো জানান, মাথায় আঘাত পাওয়া রোগিদের অপারেশনের প্রয়োজন হলে জিবি হাসপাতালের জেনারেল সার্জনরাই তা করতে পারবেন৷ কিন্তু, আঘাত মারাত্মক হলে তা এখানে করা সম্ভব নয়৷ সে ক্ষেত্রে রোগীদের বহিঃরাজ্যে পাঠানো হবে৷ কিন্তু, বহিঃরাজ্যের পাঠানো রোগীদের চিকিৎসার খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে কি না এই প্রশ্ণের জবাবে স্বাস্থ্যসচিব জানান, বিপিএল ভুক্ত রোগীরা সরকারি খরচে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন৷ এপিএল ভুক্তদের ক্ষেত্রে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসায় ব্যয় নিজেদেরই বহন করতে হবে৷ তবে, খুব শীঘ্রই চুক্তির ভিত্তিতে নিউরো সার্জন এবং নিউরো এনাস্থেটিক ট্রমা কেয়ার সেন্টারের জন্য আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব সমরজিৎ ভৌমিক৷
এদিকে, নির্বাচনের আগে ট্রমা সেন্টার চালু করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মানিক সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি৷ বিজেপি তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করেছে৷ বিজেপি-র প্রদেশে মুখপাত্র ডা অশোক সিনহা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণের পর ট্রমা সেন্টার করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মাথায় চিন্তা এসেছিল বলে তিনি প্রকাশ্য দাবি করেছেন৷ কিন্তু এই ঘটনার ঘটেছে ২০০৮ সালে৷ ২০০৬ সালেই এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ মঞ্জুর হয়ে যায় এবং কাগজেপত্রে তথাকথিত বাড়িও ট্রমা সেন্টারে জন্য তৈরি হয়ে যায়৷ অন্যদিকে তিনি জেলা হাসপাতালগুলোতে ট্রমা সেন্টারে করার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন৷ যেখানে ধলাই জেলায় ২০০৯ সালেই ট্রমা সেন্টারের জন্য কেন্দ্রয়ী সরকার ১৬০ কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছে৷ পরিকল্পনা এবং বাজেট ছাড়া তা হওয়া অসম্ভব৷ এতেই বোঝা যায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কতটা সত্যবাদী৷ তিনি আরও বলেন, নিবাচনের আগে ট্রমা সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে৷ কিন্তু সেখানে উদ্বোধনের বিষয়টি কাগজেপত্রে আরও আগেই হয়েছিল৷ আবার বিশেষজ্ঞ ছাড়াই, এমন কি একজন নিউরোলজিস্ট ছাড়াই ট্রমা সেন্টার খোলা হয়েছে৷ বাস্তবে যেখানে কোনও চিকিৎসাই হবে না৷ তিনি আরও জানান, উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাবে প্রতি মাসে গড়ে ৪০ জন রোগীকে মাথায় আঘাত নিয়ে বহিঃরাজ্যে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়৷ ট্রমা সেন্টার হওয়ার পরও এই সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *