BRAKING NEWS

জনবহুল জাপানে দ্রুত হারে বাড়ছ মৃত্যু

টোকিও৩ ডিসেম্বর (হি.স.): প্রযুক্তি নির্ভরজনবহুল জাপানে দ্রুত হারে বাড়ছে একাকী মৃত্যু। জাপানি ভাষায় যাকে বলে কোডোকুশি১৯৮০ সালে প্রথম কোডোকুশি শব্দটি ব্যবহৃত হয় জাপানেসেই সব বয়স্কদের মৃত্যু বোঝাতেযাঁদের মৃত্যুর খবর কখনও দীর্ঘদিন তো কখনও কয়েক বছর পর নজরে আসে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব চিত্র। জাপানি জনসংখ্যার ২৭.‌৭ শতাংশের বয়স ৬৫ বছর বা তার উপরে।

একটি মার্কিন পত্রিকার সাংবাদিক নোরিমিৎসু ওনিশি বলছেনএই সব বয়স্কদের সন্তানরা হয় অন্য দেশে বা অন্য শহরে থাকেন। ঘরে পড়ে থাকছেন একাকী বৃদ্ধ মাবাবা। শেষ বয়সে সঙ্গী খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। ফলে একাকিত্ব তাঁদের আরও হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। এই অবস্থায় তাঁরা ঘরের ভিতরেই আরও গুটিয়ে রাখছেন নিজেদের এবং একা একা একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। বেশিরভাগ সময়ই সেই মৃত্যুর খবর অন্যরা জানতে পারছেনপচা মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বেরলে। ওনিশি লিখেছেন১৯৯৭ সালে একটি বহুতলে ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধ এভাবেই একাকী মারা যান। ৩ বছর পর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়ি গিয়ে দরজা ভেঙে বৃদ্ধের কঙ্কাল আবিষ্কার করে। তাঁর দেহাবশেষও খেয়ে ফেলেছিল পোকারা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছিলওই বৃদ্ধের ভাড়াবা অন্যান্য খরচের হিসেব সরাসরি তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হত। সেভিংস ফুরিয়ে যাওয়ার পরই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়ি যান। ২০০০ সালের ওই ঘটনা কিছুদিন ঝড় তুললেও কোনও সমাধান আজও।

৯১ বছরের চিকো ইতো ২৫ বছর আগে ক্যান্সারে ৩ মাসের ব্যবধানে হারিয়েছেন স্বামী এবং মেয়েকে। তিনি যে জীবিত তা বোঝাতে প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘরের জানলার কাচে কাগজ লাগিয়ে রাখেন। সকালে উঠে তা তুলে ফেলেন। প্রতিবেশীকে ইতো বলেছেনযদি কোনওদিন সেটা তিনি না করেনতাহলে বুঝতে হবে তিনি মৃত। ৮৩ বছরের কিনোশিতা বলছেনতিনি বাইরে গিয়েছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে। চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন। কিন্তু আজ তাঁর স্বপ্নের মতোই জাপানও হারিয়ে গিয়েছে বলে আক্ষেপ করলেন কিনোশিতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *