BRAKING NEWS

আল কায়দার ২৫ জন জঙ্গি এখনও ভারতে

`কলকাতা, ২৪ নভেম্বর ( হি.স.): আল কায়দার সহযোগী জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লা বাংলা টিম বা ‌এ বি টি-এর ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য এখনও ভারতেই রয়েছে । এ রাজ্যে ধৃত দুই জঙ্গিকে জেরা করে সেরকম তথ্যই পাওয়া গেছে । উত্তরপ্রদেশ, হায়দারাবাদ এবং পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে ‘‌স্লিপার সেল’ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠনটি ।
কাদের মদতে দেশের মাটিতে তারা জাল বিস্তার করছে, সে বিষয় খোঁজখবর করতে লালবাজারে হাজির হন ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা ‌এন আই এ-র দুই অফিসার । এসেছিলেন হায়দরাবাদ পুলিশের ‌এ টি এস-এর অফিসাররাও । এমনকি, দেশের সীমানার সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা বি এস এফের কর্তারাও‌ হাজির হয়ে যায় কলকাতা পুলিশে দফতরে । দীর্ঘক্ষণ তারা দুই সন্দেভাজন জঙ্গি তানভির ওরফে সামসাদ এবং রিয়াজুলকে জেরা করে । নতুন নতুন তথ্যও উঠে এসেছে । কিন্তু এখনই এ সব বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না গোয়েন্দারা । কলকাতা পুলিসের স্পেশাল ট্যাক্স ফোর্সের ডি সি ‌ মুরলীধর শর্মা জানান,‌ এটা আমাদের কাছে একটা বড় সাফল্য । বড়সড় পরিকল্পনা রুখে দেওয়া গেছে। নতুন তথ্য মিলছে ।
পুলিশ কিছু না বলতে চাইলেও, তাদের তৎপরতা দেখে বোঝা যাচ্ছে এই দু’-জনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য তাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ । এদিন লালাবাজারে জঙ্গিদের ডিভাইস দিয়ে গোয়েন্দারা দেখতে চান, কীভাবে তারা বিস্ফোরক বানাত । আনসারুল্লা বাংলা টিমের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত বিশেষ পদ্ধতিতে । তারা কখনও নিজেদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ রাখত না । বিশেষ অ্যাপে এস এম এসের মাধ্যমে কথোপকথন চালাত । এমনকী অন্য কোনও এজেন্টের কাছ থেকে কিছু নিতে হলে, একই ব্যক্তি ৫টি‌র বেশি সিম কার্ড ব্যবহার করত । যাতে কেউ তাদের হদিশ না পায় । প্রত্যেকবার আলাদা পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করত ।
লালবাজার সূত্রে খবর, ধৃত দুই জঙ্গি জেরায় সহযোগিতা করছে না । অত্যন্ত কৌশলে তাদের কাছ থেকে কথা বের করতে হচ্ছে গোয়েন্দাদের । মনোতোষ দে-র সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর, তার কাছে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চেয়েছিল তারা । কিন্তু তাদের চাহিদামতো বন্দুক দিতে পারেনি মনোতোষ । গ্রেফতারের দিনও যে অস্ত্র মনোতোষ তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তা–ও পছন্দ হয়নি । উল্লেখ্য, মনোতোষ মুঙ্গেরি পিস্তল তাদের বেচার চেষ্টা করেছিল । এই মনোতোষকে নিয়েও রয়েছে নানা রহস্য । একাধিক থানায় মনোতোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে । ১১ মাস সে জেলও খেটেছে । মনোতোষের মাধ্যমেই বাংলাদেশে ৫-৬ বার অস্ত্র গেছে ।
আল কায়দার হয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতে সংগঠন বিস্তার করতে আনসারুল্লা বাংলা টিমকে সাহায্য করছে ‘‌মেজর’‌‌ জিয়া । সেনাবাহিনী থেকে পলাতক জিয়া পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয় । এবং কয়েকজনের সহযোগিতায় সে প্রভাব বিস্তার করে বাংলাদেশে । গত কয়েক বছর ধরে সেখানে ‘মুক্তমনা ব্লগার’ এবং বুদ্ধিজীবীদের টার্গেট করে তারা । তবে এ রাজ্যে সেরকম কাউকে টার্গেট করেছিল কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য আসেনি। জানার চেষ্টা চলছে । এখানে তারা রেইকি করতেই এসেছিল । এবং তাদের প্রধান কাজ ছিল, এখান থেকে অস্ত্র কিনে বাংলাদেশে পাঠানো । সে কাজে তারা সফলও হয়েছে । শেষবার অস্ত্র পাঠাতে গিয়ে অবশ্য পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *