BRAKING NEWS

জোটের পথে বিজেপি

১৮ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিবে বলিয়া বারবার দাবি করিতেছে৷ সম্প্রতি সাব্রুমে সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য নারায়ণ কর বিজেপির এমন দাবি ফুৎকারে উড়াইয়া দিয়া দাবি করিয়াছেন যে, বিজেপির এমন খায়েস কোনও দিন পূর্ণ হইবে না৷ কেননা, প্রার্থী একের বিরুদ্ধে এক নয়৷ তাহা চার হইতে পাঁচও হইতে পারে৷ এবং কি করিয়া হইবে তাহাও তিনি বুঝাইয়া দিয়াছিলেন৷ অন্যদিকে বিজেপি একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিবার জন্যে ইতিমধ্যে তোড়জোর শুরু করিয়া দিয়াছে৷ কেননা, বিজেপি নেতৃত্বরা ভালো করিয়া বুঝিতেছেন যে, অবাম প্রার্থী বেশী হইলে সিপিএম লাভবান হইবে৷ সিপিএমের একটি নির্দিষ্ট ভোট ব্যাঙ্ক রহিয়াছে৷ পক্ষান্তরে অবাম ভোট বহুধায় বিভক্ত৷ অবামরা বহুধা-র পথে হাটিবে৷ আর বাম ভোটাররা এক পথে হাটিবে৷ দীর্ঘ বছর ধরিয়া তাহারা এইভাবে হাটিবার কারণে বামফ্রন্ট তথা সিপিএম মসনদে ফিরিয়া আসিতেছে৷ অন্যদিকে অবাম প্রার্থীদের অবস্থা শোচনীয় হইতেছে৷ অনেক প্রার্থীর জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হইতেছে৷ বিজেপি এইবার এমন ধারা পরিবর্তন করিতে চাহিতেছে৷ কেননা, বিজেপি নেতৃত্বরা সম্যকভাবে উপলব্ধি করিতে পারিতেছেন যে, এই ফাঁক বন্ধ করা না গেল কাজের কাজ কিছুই হইবে না৷ শুধু তর্জন গর্জনই সার হইবে৷ ইহার প্রেক্ষিতে বিজেপি নির্বাচনের অনেক আগে হইতে মাঠে নামিয়া পড়িয়াছে৷ ক্ষমতা দখলের জন্য তাহারা রণ কৌশল ঠিক করিয়া অগ্রসর হইতেছে৷ এবং একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিবার জন্য নানা ভাবে ছক কষিতেছে৷
বিজেপি নেতৃত্ব ভালো করিয়াই বুঝিতেছেন যে, রাজ্যে ক্ষমতায় আসিবার একমাত্র সোপান হইল পাহাড়৷ বিধানসভার ষাটটি আসনের মধ্যে পাহাড়ে রহিয়াছে বিশটি আসন৷ সুতরাং বিজেপির জন্য পাহাড় দখল অনিবার্য হইয়া পড়িয়াছে৷ কিন্তু, পাহাড়ে উপজাতি ভিত্তিক আঞ্চলিক দলের অভাব নাই৷ ইহার মধ্যে দুইটি দল আবার আলাদা রাজ্যের দাবীদার৷ এই দল দুইটি হল দ্বিধাবিভক্ত আইপিএফটি এবং টিএসপি তথা তিপ্রাল্যান্ড স্টেট পার্টি৷ এই সদ্য গজাইয়া উঠা পার্টির সুপ্রিমো হইলেন চিত্তরঞ্জন দেববর্মা৷ অন্যদিকে রহিয়াছে এডিসিতে অধিক ক্ষমতার দাবীদার আইএনপিটি সহ অন্যান্য ছোটখাটো আঞ্চলিক দল৷ বিজেপি এইসব আঞ্চলিক দলের উপর জোর দিতেছে৷ অন্যদিকে নেডা- তথা নর্থ ইস্ট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও বারবার রাজ্য সফরে আসিতেছেন৷ ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলি নিয়া আসামে বিজেপির সফল উত্তরণের পর এই রাজ্যেও বিজেপি একই কায়দায় আগাইতে চাহিতেছে৷ ইহার ফলশ্রুতিতে পাহাড়ের এক সময়ের শক্তিশালী উপজাতি ভিত্তিক আঞ্চলিক দল আইপিএফটি ও এনসিটির সাথে বিজেপি অনেকটা সমঝোতার পথে আগাইয়া গিয়াছে৷ আইএনপিটি সুপ্রিমো বিজয় কুমার রাঙ্খলের সাথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের এই ব্যাপারে কথাবার্তা হইয়াছে৷ রাজনাথ সিং এডিসিতে অধিক ক্ষমতা প্রদানের বিষয়ে সহমত পোষণ করিয়াছেন৷ সেই সাথে পাহাড়ে বিজেপির সহিত জোটের বিষয়টি লইয়া আলোচনা হইয়াছে৷ তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নাই বলিয়া জানাইয়াছেন রাঙ্খল৷ তবে ইহাও সত্য যে, বিজেপি অত্যন্ত সন্তর্পণে নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করিতেছে৷ পাহাড়ে আর বড় শক্তি হইল আলাদা রাজ্যের দাবীদার আইপিএফটি৷ দ্বিধাবিভক্ত এই দলকে যেকোনও কৌশলেও সামাল দিতে পারিলে বিজেপির জয়ের পথ অনেকটা সুগম হইবে৷ কেননা, পাহাড়ে তখন একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীই প্রাধান্য পাইবে৷ আর নাম সর্বস্ব কিছু দল থাকিলেও তাহারা ধর্তব্যের মধ্যে পড়িবে না৷ সমতলেও বিজেপি এইভাবে ছক কষিয়া অগ্রসর হইতেছে৷ বর্তমানে কংগ্রেস ও তৃণমূল লইয়া রাজ্যবাসীর কোনও হেলদোল নাই৷ বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে সিপিএম এবং বিজেপি হাওয়া বহিতেছে৷ নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে চাহিবে বটে৷ তবে এমন চাওয়া ভাত খাইবার সময়ে কয়েকটা ভাত থালা হইতে পড়িয়া যাইবার মত হইবে৷ এমন দশা তেমন কোনও হতাশার সৃষ্টি করিতে পারিবে না বলিয়া বিজেপির নেতৃত্বদের ধারণা৷ এবং এই ধারণার বশবর্তী হইয়া বিজেপি বারবার দাবি করিতেছে যে, একের বিরুদ্ধে একের লড়াই হইবে৷ সেই পথেই হাটিতেছে বিজেপি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *