BRAKING NEWS

ভূয়া অপহরণ কান্ড

সম্প্রতি রাজ্য রাজনীতিতে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়া গেল৷ এমন ঘটনার পিছনে যে এক গভীর ষড়যন্ত্র রহিয়াছে তাহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না৷ এই অনভিপ্রেত ঘটনা লইয়া এখনও আলোচনা সমালোচনা চলিতেছে৷ চলিতেছে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত বিশ্লেষণ৷ কেননা, এই ঘটনা যেমন ছিল অনভিপ্রেত তেমনই ছিল জাতিগত দাঙ্গার জন্য যথেষ্ট উস্কানিমূলক৷ তাই মঙ্গলবার রাজ্যবাসীর দৃষ্টি ছিল বোধজংনগরে সংঘটিত সেই রক্তক্ষয়ী উত্তেজনাকর সংঘর্ষের দিকে৷ সেইদিন থানায় যেন মহাপ্রলয় ঘটিয়া গেল৷ ভাঙচুর করা হইল বোধজংনগর থানা৷ উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসার সহ কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হইল৷ পরিস্থিতি সামাল দিবার জন্য বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী নিয়োগ করা হইল৷ উচ্ছৃঙ্খল জনতার উদ্দেশ্যে ছোঁড়া হইল জন-কামাল, কাঁদানে গ্যাস এবং অবস্থা বুঝিয়া করা হইল লাঠিচার্জ৷
প্রশ্ণ হইল, সেই দিন কেন এমন লঙ্কাকান্ড ঘটিয়াছিল বোধজংনগরে? থানায় হামলাকারীদের অভিযোগ ছিল অপহৃতা এক উপজাতি মহিলাকে উদ্ধার করিতে পুলিশ ব্যর্থ হইয়াছে৷ হামলাবাজদের রোষাণলে পড়িল বোধজংনগর থানা৷ এডিসি এলাকা হইতে একাংশ উপজাতি মহিলা পুরুষ টাক্কাল, দা, বল্লম ও লাঠিসোটা নিয়া গাড়ি করিয়া ছুটিয়া আসিল বোধজংনগর থানায়৷ ইহার পর পরিস্থিতি এমন আকার ধারণ করিল যে, যাহাকে নারকীয় অবস্থা বলা যায়৷ এবং এমন কান্ডে রাজ্যবাসী হতবাক হইয়া গেল৷ কেননা, এমন অপহরণের ঘটনা রাজ্যে যে নতুন ঘটিয়াছে তাহা নহে৷ সারা রাজ্য জুড়িয়া ভুরি ভুরি এই ধরনের অপহরণের ঘটনা প্রায় প্রতিদিন যেমন ঘটিতেছে তেমনই পুলিশ অধিকাংশ অপহৃতাকে উদ্ধার করিতেও সক্ষম হইতেছে৷ কিন্তু, সেদিন এক উপজাতি মহিলাকে অপহরণ করিবার ঘটনায় একাংশ উপজাতি মানুষদের অতি আগ্রহ কেন দেখা দিয়াছিল? একাধিক গাড়ি করিয়া দলে দলে ভূমিপুত্র কেন বোধজংনগর থানায় ছুটিয়া আসিয়াছিল৷ এবং যাহারা আসিয়াছিল তাহারা কি কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকিয়া পুষ্ট হওয়া ভূমিপুত্র? তাহারা কি কোনও বিশেষ দলের সুপ্রিমোর হাতের পুতুল৷ এবং সেই সাথে প্রশ্ণ আসিয়া যাইতেছে যে, ওই হামলাবাজ ভূমিপুত্ররা আইন নিজের হাতে তুলিয়া নিয়া কী বুঝাইতে চাহিয়াছিল? এই ধরনের প্রশ্ণ কিন্তু আসিয়া যায়৷ কেননা, রাজ্য জুড়িয়া আগাম নির্বাচনী হাওয়া বহিতেছে৷ এই হাওয়া যেন ধীরে ধীরে বিষাক্ত হইয়া উঠিতেছে৷ বর্তমানে পাহাড়ে যেন এই বিষের হাওয়া বহিতেছে৷ আলাদা রাজ্যের দাবীতে আইপিএফটির রণংদেহী আচরণ কাহারো অজানা নয়৷ সম্প্রতি আলাদা রাজ্যের দাবীতে আইপিএফটির সংঘটিত রাস্তা ও রেল অবরোধে উদ্দাম উলঙ্গ কান্ড কারখানাও সকলেই অবগত রহিয়াছে৷ ফলে রাজ্য রাজনীতিতে আইপিএফটি উগ্র দল হিসাবে চিহ্ণিত হইয়াছে৷ ইতিমধ্যে এই দল ঘিরিয়া রাজ্যবাসীর আতংক চরমে উঠিয়াছে৷ মঙ্গলবার বোধজংনগর থানা যাহারা আক্রমণ করিয়াছিল তাহারা হইল একাংশ ভূমিপুত্র৷ আরা তাহারা যেই মহিলা অপহৃতা হইয়াছিল বলিয়া দাবি করিয়াছিল তিনিও এক উপজাতি মহিলা৷ তাই বলা যাইতে পারে পুরো অবাঞ্ছিত ঘটনা জুড়িয়া রহিয়াছে একাংশ ভূমিপুত্র৷ এবং চিলে কান নিয়া গিয়াছে এর মত সংঘটিত ঘটনা কি পূর্ব পরিকল্পিত? কেননা, পরবর্তীতে ওই অপহৃতা মহিলার সন্ধান পাওয়া গিয়াছে তাহার বাপের বাড়িতে৷ তবে কি এই অপহরণ মামলা সাজানো? ইহার পিছনে কি কোনও দুরভিসন্ধী রহিয়াছে? কেননা, হামলাকারীদের শারীরিক ভাষার সহিত আইপিএফটি সমর্থকদের দৈহিক বাষার যথেষ্ট মিল রহিয়াছে৷ তাই বোধজংনগর হামলাকে কোনও বিচ্ছিন্ন হামলা বলিয়া ভাবিতেছে না রাজনৈতিক মহল৷ কেননা, কল্পিত অপহরণের ঘটনা ঘিরিয়া রাজ্য প্রশাসনকে বিচলিত করিবার ঘটনা রাজ্যে এই প্রথম৷ যেই দলই এমন অবাঞ্ছিত ঘটনার জন্য দায়ী হউক না কেন, ওই দল যে শিখন্ডী হিসাবে কাজ করিয়াছে তাহা বলিবার অপেক্ষা রাখে না৷ এই শিখন্ডীর পিছনে রহিয়াছে কোনও জাতীয়দলের মদত৷ নির্বাচনের আগে রাজ্য জুড়িয়া প্রবল অশান্তি সৃষ্টি করিয়া ঘোলা জলে মাছ শিকার করিবার জন্য তাহারা ছক কষিতেছে৷ এবং আশংকা করা হইতেছে যে, নির্বাচন যতই আগাইয়া আসিবে রাজ্যে জুড়িয়া ততই শান্তির বাতাবরণ বিঘ্নিত হইবে৷ তাই এমন অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি যাহাতে সৃষ্টি না হয় তাহার জন্য সচেতন রাজ্যবাসী এবং আরক্ষা প্রশাসনকে সতর্ক থাকিতে হইবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *