BRAKING NEWS

বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর জিগির

হঠাৎ করিয়া রাজ্য বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রীর জিগির উঠিল৷ প্রথমে এই জিগির তুলিয়া ধরিলেন রাজ্য বিজেপির প্রভারী সুনীল দেওধর৷ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত যুবমোর্চার সম্মেলনে বক্তব্য রাখিতে গিয়া সুনীল দেওধর জানাইয়া দিলেন যে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব হইলেন এই রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী৷ ইহার অর্থ হইল বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রজেক্ট করিয়া বিজেপি নির্বাচনে লড়িবে৷ দেওধরের পর এই ধবনি আবার শোনা গেল ৩০ জুলাই এসসি মোর্চার আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে৷ ওইদিন এস সি মোর্চা নতুন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে অভিনন্দন জানাইবার জন্য এই কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেছিল৷ সম্মেলনে বক্তব্য রাখিলেন সর্বভারতীয় এস সি মোর্চার সভাপতি বিনোদ কুমার শোনকর এবং এস সি মোর্চার সম্পাদিকা শ্রুতি বঙ্গারু৷ সোনকরের বক্তব্যে উঠিয়া আসিয়াছিল রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের অনিবার্য পতনের চিত্র এবং বিজেপির ক্ষমতা দখলের পূর্বাভাস৷ সেই সাথে সোনকর অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলিলেন যে, ১৮-এর নির্বাচনে এস সির দশটি আসনই এইবার বিজেপির ঝুলিতে যাইবে৷ এবং সিপিএমের পরাজয় নিশ্চিত৷ কিন্তু, সর্বভারতীয় এস সি মোর্চার সম্পাদিক শ্রুতি বঙ্গারু যেন তাহার ভাষণে আরও একধাপ আগাইয়া গেলেন৷ শ্রুতি তাঁহার ভাষণে বলিলেন যে, আগামী নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠন কার্যত নিশ্চিত৷ এই রাজ্যের মানুষ আগামী বছরই বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখিতে চাহিতেছেন৷
বিজেপির রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর এবং এস সি মোর্চার সম্পাদিকা শ্রুতি বঙ্গারু কি বুঝাইয়া দিলেন যে, বিজেপি ক্ষমতায় আসিলে বিপ্লবই হইবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ বাতাসে এমন বার্তা ছড়াইয়া দিয়া কি এই দুই নেতা রাজ্যের অবাম সমর্থকদের পাল্স বুঝিতে চাইতেছেন? তবে এইটাও সত্য যে, সর্বভারতীয় বিজেপির শীর্ষ নেতারা সবুজ সংকেত না পাইলে সুনীল ও শ্রুতি এমন কথা বলিবার সাহস পাইতেন না৷ কিছুদিন আগেও রাজ্য বিজেপি হইতে জানানো হইয়াছিল যে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী কে হইবেন তাহা ঠিক করিবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা৷ তবে কি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের কাছ হইতে সুনীল ও শ্রুতি এমন আশ্বাস পাইয়াছেন? ইহা লইয়া রাজ্যস্তরে যেমন গুঞ্জন চলিতেছে তেমনই আর একটি বিষয় বাতাসে ভাসিতেছে৷ তাহা হইল সুদীপ এন্ড কোংদের নিয়া৷
বলিবার অপেক্ষা রাখে না যে, হয়তোবা চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কংগ্রেস ত্যাগ করা এবং ডিগবাজী খাওয়া ছয় বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতেছেন৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এর সাথে দেখা করিবার জন্য ৩১ জুলাই ওই ছয় বিধায়ক হইতে পাঁচ বিধায়ক দিল্লী গিয়াছিলেন৷ অমিতজীর সহিত দেখা করিবার অর্থ হইল- ওই বিধায়কদের বিজেপিতে যোগ দিবার দিনক্ষণ ঠিক করা৷ ইতিমধ্যে ওই পাঁচ বিধায়কের আগে দিল্লী ছুটিয়া গিয়াছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব৷ ফলে মুখ্যমন্ত্রীর জিগিরের বিষয়টি প্রশ্ণের মুখে পড়িয়াছে৷ কেননা, এতদিন রাজ্য বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর প্রজেক্ট লইয়া কোনও আলোকপাত করিল না৷ কিন্তু যখনই সুদীপবাবুরা বিজেপিতে যোগ দিতে যাইতেছেন তখনই মুখ্যমন্ত্রী প্রজেক্টই বাতাসে ভাসাইয়া দিলেন বিজেপি নেতৃত্বরা৷ তবে কি ইহার পিছনে কোনও অভিসন্ধি রহিয়াছে? এমনটি ভাবিবার যথেষ্ট কারণও রহিয়াছে৷
এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যাইতে পারে যে ১৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের বিষয়টি৷ সেই সময় পিসিসি সভাপতি ছিলেন সুদীপ রায় বর্মন৷ নির্বাচনের পর ফলাফল ঘোষণার আগে তিনি কংগ্রেস ভবনে বসিয়া ছায়া মন্ত্রীপরিষদও গঠন করিয়াছিলেন৷ এবং মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি নিজে৷ হয়তোবা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বরা বিষয়টি বুঝিতে পারিয়াছেন৷ তাই সুদীপবাবুকে কড়া বার্তা দিবার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রজেক্টই তুলিয়া ধরিলেন৷ জানাইয়া দিলেন যে, উড়িয়া আসিয়া জুড়িয়া বসিবার কোনও অবকাশ নাই৷ যতটুকু দেওয়া হইবে তাহাতে তুষ্ট থাকিতে হইবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *