BRAKING NEWS

বর্ষায় বেআব্রু উন্নয়ন

আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে রাজ্য জুড়িয়া প্রবল বর্ষণে প্লাবিত হইল অনেক গ্রাম৷ বিপদসীমার উপর দিয়া বহিতেছে খোয়াই নদীর জল৷ অনেক পরিবার বাধ্য হইয়া বাড়িঘর ছাড়িয়া স্বল্প দিনের জন্য শরণার্থী হইয়াছিল৷ আবার অনেক বাড়িঘর বর্ষণের পাশাপাশি প্রবল ঝড়ে মাটিতে মিশিয়া গিয়াছিল৷ সেই দিনের প্রবল বর্ষণের পর বর্তমানে বর্ষায় তেমন মারাত্মক বিপর্যয় দেখা যাইতেছে না৷ তবে, রাজ্যের নানা স্থানে বৃষ্টি হইতেছে৷ এবং এই বর্ষণ আষাঢ়ের পর শ্রাবণ মাসেও স্বাভাবিক বর্ষণ৷ অবশ্য প্রবল বর্ষণে সব্জি চাষিরা বিপদে পড়িয়াছে৷ এক দিকে বৃষ্টির সহিত বহিতেছে ঝড়ো হাওয়া৷ ঘটিতেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট৷ সামান্য ঝড়ো হওয়ায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়িয়া যাইতেছে৷ বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার নদীতে হুমড়ি খাইয়া পড়িতেছে৷ বিদ্যুৎ খঁুটি উপড়াইয়া পড়িয়া মাটিতে লুটোপুটি খাইতেছে৷ চটজলদি সারাই করা যাইতেছে না৷ ইহার জন্য কারণ দর্শানো হইতেছে কর্মী স্বল্পতার৷ ফলে দিনের পর দিন কোনও কোনও এলাকা অন্ধকারে ডুবিয়া রহিয়াছে৷ ঝড় বৃষ্টি আসিলেও বিদ্যুতের পরিষেবা অটুট থাকিবে তেমন কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যাইতেছে না৷ তবে, ইহাও সত্য যে, বর্তমানে রাজ্য জুড়িয়া লোড শেডিংয়ের ঝক্কি ঝামেলা নাই৷ ইহার জন্য বিদ্যুৎ নিগমকে অবশ্যই বাহ্বা দিতে হইবে৷
তবে, বৃষ্টি আসিলে রাজ্যের উন্নয়নের চিত্রটা কিন্তু প্রকাশ্যে আসিয়া যাইতেছে৷ বর্তমানে রাজ্য জুড়িয়া জাতীয় সড়কে ডবল লাইনের কাজ জোর কদমে চলিতেছে৷ রাস্তার ধারে পূর্ত দপ্তরের দেওয়া বোর্ডে লিখা রহিয়াছে- ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস৷ অর্থাৎ উন্নয়নের কাজ চলিতেছে৷ কিন্তু, সেই কাজ কতটুকু উন্নত হইতেছে তাহা বৃষ্টি আসিলে মালুম হইতেছে৷ প্রবল বর্ষণে সাব্রুমে রাস্তার পাশে নির্মাণ করা সাইড ওয়াল ভাঙ্গিয়া গিয়াছে৷ এই ওয়াল হইয়াছে পাশের লেইকে৷ জাতীয় সড়কে নির্মাণ কাজে এই ভাবে চলিতেছে উন্নয়নের ধারা৷ তেমনই বৃষ্টি আসিলে রাজ্যের বিভিন্ন রাস্তার উন্নয়ন যেন খাটাসের মত হাসিতেছে৷ রাজ্যের প্রধান সড়ক সহ অন্যান্য সড়ক ও অলিগলিতে বৃষ্টি আসিলে উন্নয়নের চিত্র যেন ল্যাংটা হইয়া যাইতেছে৷ বর্ষা যেন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাগুলির উন্নয়নের চিত্রকে যেন ব্যঙ্গ করিতেছে৷ ফলশ্রুতিতে বৃষ্টিতে বিভিন্ন রাস্তার খানা খন্দের বাস্তব চিত্র উঠিয়া আসিতেছে৷ বৃষ্টিতে ধরা পড়িতেছে যে, রাজ্যের প্রতিটি রাস্তা অসংখ্য গর্তে ভরিয়া রহিয়াছে৷ ইহার ফলে বৃষ্টির সময়ে যানচলাচল যেমন হুমকির মুখে পড়িতেছে তেমনই পথচারীরাও দুর্ভোগের শিকার হইতেছে৷ বৃষ্টির কারণে অনেক রাস্তা জল ও কাদায় একাকার হইয়া গিয়াছে৷ অথচ রাজ্য সরকার দাবি করিতেছে যে, রাজ্য জুড়িয়া উন্নয়নের জোয়ার বহিতেছে৷ শুধু রাজধানীর ভিআইপি রোড ছাড়া অন্যান্য রাস্তাগুলিতে উন্নয়ন চোখে পড়িতেছে না৷ বরং উঠিয়া আসিতেছে দুর্নীতির চিত্র৷ বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণ করিবার কিছুদিন পর দেখা যাইতেছে যে, ওই রাস্তা সমূহের ছাল বাকল উঠিয়া গিয়াছে৷ রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্তের আবির্ভাব ঘটিয়াছে৷ ওই সব গর্তে বৃষ্টির জল খেলা করিতেছে৷ এমন করিয়া চলিতেছে রাস্তার উন্নয়ন৷ এমন উন্নয়নে যে বিশাল দুর্নীতি মিশিয়া রহিয়াছে তাহা জানাইয়া দিতেছে বর্ষা৷ ঠিক তেমন করিয়া বিভিন্ন সরকারী ভবন নির্মাণের দুর্নীতিও বর্ষা তুলিয়া ধরিতেছে৷ বর্ষার সময় অনেক সরকারী ভবনের ছাদ ও দেওয়াল চুয়াইয়া জল পড়িতে দেখা যায়৷ ইহার অন্যতম কারণ হইল নির্মাণ কাজে দুর্নীতি৷ বর্ষা আসিলে এইসব দুর্নীতির চিত্র উঠিয়া আসিতেছে৷ বেআব্রু হইয়া পড়িতেছে রাজ্য জুড়িয়া উন্নয়নের চিত্র৷ অথচ কেন্দ্রীয় সরকার এই সব উন্নয়নের জন্য ঢালাওভাবে অর্থ বরাদ্দ করিতেছে৷ কিন্তু, ইহার সুফল রাজ্যবাসী পাইতেছে না৷ কাজ হইতেছে৷ তবে, এইসব কাজে মিশিয়া রহিয়াছে দুর্নীতি৷ ত্রিবেণী সঙ্গমে এই দুর্নীতি ঘুরপাক খাইতেছে৷ প্রথমটি হইলো বরাত প্রাপ্ত নির্মাণ সংস্থা৷ দ্বিতীয়টি হইলো নির্মাণ সংস্থার নিয়োগ করা ঠিকাদারবাবু এবং তৃতীয়টি হইলে নির্মাণ কাজ তদারকি করিবার জন্য নিয়োজিত সরকারী কর্মী তথা ইমপ্লিমেন্টিং অফিসার৷ এই ত্রিবেণী সঙ্গমে চলিতেছে বিরাট দুর্নীতির ঘোটালা৷ বর্ষা এমন গোপন চিত্র রাজ্যবাসীরে সামনে তুলিয়া ধরিতেছে৷ ইহার ফলে বর্ষা যেন, রাজ্য জুড়িয়া উন্নয়ন কর্মকান্ডের ভিলেন হিসাবে চিহ্ণিত হইতেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *