BRAKING NEWS

নির্মাণ সামগ্রীর দাম উর্দ্ধমুখী

হঠাৎ করিয়া বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে৷ ফলে সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ ব্যাহত হইতেছে৷ বর্তমানে রাজ্য জুড়িয়া বহিতেছে উন্নয়নের জোয়ার৷ অস্বীকার করা যাইবে না যে, রাজ্য জুড়িয়া সরকারীভাবে তৈরী হইতেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট হইতে শুরু করিয়া বিভন্ন সরকারী দপ্তরের সুদৃশ্য ভবন৷ সেই সাথে রাজ্য জুড়িয়া প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বেনিফিসিয়ারীরা ঘর পাইয়াছেন৷ এই ঘর নির্মাণ বাবদ কেন্দ্রীয় সরকার দিতেছে এক লখ ছেষট্টি হাজার টাকা৷ রাজ্য সরকার দিতেছে দশ হাজার টাকা এবং বেনিফিসিয়ারিদের ঘাড়ে চাপানো হইয়াছে এক লাখ দশ হাজার টাকা৷
এই বিষয়টি নিয়া মতবিরোধ রহিয়াছে৷ ঘর বরাদ্দ হইবার কথা গরিবদের জন্য৷ আর গরিবদের হাতে এক লাখ দশ হাজার টাকা থাকিবর অর্থ হইলো বড়লোক হইয়া যাওয়া৷ ফলে অনেক বেনিফিসিয়ারি তাহাদের জন্য বরাদ্দ ঘর ফেরত দিতে বাধ্য হইয়াছেন৷ অবশিষ্ট যাহারা ঘর নিয়াছেন তাহারা পড়িয়াছেন মহা ফ্যাসাদে৷ কেননা, কেন্দ্র হইতে যেই অর্থ বরাদ্দ করা হইয়াছে তাহা দিয়া ১৪ বাই ৭ হাত বিশিষ্ট ঘর নির্মাণ করা সম্ভব নহে৷ তাহাতে আবার থাকিতে হইবে বারান্দার ঘর, রান্নাঘর, বাথ রুম৷ এলাহি কাজ কারবারে নগন্য প্রাপ্তি ফলে ঘর প্রাপকরা পড়িয়াছে মহা বিপদে৷ সেই সাথে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর সামিল হইয়াছে৷
এই মূল্যবৃদ্ধির পিছনে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে বলিয়া মনে হইতেছে না৷ কেননা, এইসব নির্মাণ সামগ্রীর উপর নতুন করিয়া কর যেমন বৃদ্ধি হয়নি তেমনই বড় ধরনের কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও ঘটেনি যে নির্মাণ সমগ্রী দুষ্প্রাপ্য হইয়া উঠিয়াছে৷ তবুও কেন মূল্যবৃদ্ধি হইতেছে? ইহার পিছনে রহিয়াছে ফটকাবাজির ব্যবসা৷ রাজ্য জুড়িয়া সরকারীভাবে যেমন বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলিতেছে তেমনই করিয়া শুরু হইয়াছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণের কাজ৷ ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল৷ অর্থনীতির ভাষায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হইলে পণ্যের দাম বাড়িয়া যায়৷ কেননা, এই ক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগানোর তারতম্য হইতেছে বলিয়া পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাইতেছে৷ এই ধরনের ব্যবসাকে মুনাফা লুটের ব্যবসা বলা যাইতে পারে৷ এই অধিক মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের জাঁতাকলে পড়িয়াছে বেনিফিসিয়ারিরা৷ তাহারা জেরে ঝটকায় প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা বৃদ্ধি পাইয়াছে৷ আর ইটের দাম যেন আকাশ ছোঁয়া৷ এক নম্বর যে ইট কয়েক মাস পূর্বে প্রতি হাজারের দাম সাড়ে আট থেকে নয় হাজার টাকা মফস্বলে ছিল তাহা বর্তমানে এক লাফে সাড়ে দশ হইতে এগার হাজার টাকায় বিক্রয় হইতেছে৷ মনে হইতেছে যেন, ভাট্টার মালিকরা এক জোট হইয়া অস্বাভাবিকভাবে ইটের দাম বাড়াইয়া দিয়াছে৷ সেই সাথে বালি ও রডের দামও বৃদ্ধি পাইয়াছে৷ ‘ফান্দে পড়িয়া বগা যেমন কাঁদে’- তেমনই ব্যবসায়ীদের লোভের ফাঁদে পড়িয়া ঘর প্রাপকদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা৷ একই সঙ্গে রাজ্য জুড়িয়া বিপুল সংখ্যক ঘর তৈরী হইতেছে৷ সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা এমন রমরমা সুযোগ হাতছাড়া করিবে কেন৷ বলা যাইতে পারে নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি লইয়া রাজ্য জুড়িয়া চলিতেছে তুঘলকি কারবার৷ এমন কারবার নিয়ন্ত্রণেও রাজ্য সরকারের ভূমিকা প্রশ্ণের মুখে পড়িয়াছে৷ রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর যেন বর্ষার ঘুমে মগ্ণ৷ দেখিয়াও না দেখিবার ভান করিতেছে৷ মূল্য নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণের নূ্যনতম উদ্যোগ পরিলক্ষিত হইতেছে না৷ রাজ্য সরকার ইচ্ছা করিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারে৷ আকস্মিকভাবে বিভিন্ন ভাট্টা ও নির্মাণ সামগ্রী বিক্রেতাদের দোকানে হানা দিতে পারে৷ দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখিবার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর হইতে নোটিশ জারি করিতে পারে৷ কিন্তু, তাহা করা হইতেছে না৷ ইহা নিয়া রহস্য সৃষ্টি হইতেছে৷ সরকার যেন চোখে রঙীন চশমা দিয়া রহিয়াছে৷ তাই সব কিছু রঙীন দেখিতেছে৷ ফলে আসল রঙ খঁুজিয়া পাইতেছে না৷ ইহা যেন সর্ষের ভিতর ভূত লুকাইয়া থাকিবার মত অবস্থা৷ তাই ঘর প্রাপকরা পড়েছে ভূতের কবলে৷ অন্যদিকে রাজ্য জুড়িয়া সব ক্ষেত্রে ফটকাবাজ ব্যবসায়ীদের জয় জয়কার৷ তাইতো- জয় বাবা শিব শম্ভুর মতো বলিতে ইচ্ছা হইতেছে – জয় বাবা ফটকাবাজ ব্যবসায়ীর জয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *