BRAKING NEWS

বিশ বড়ই ফ্যাক্টর

রাজ্য রাজনীতিতে পাহাড় যেন কুলীন হইয়া উঠিল৷ তবে এই পাহাড় সমতল তথা বাঙালি অধ্যুষিত পাহাড় নহে৷ এই পাহাড় হইলো রাজ্যের স্বশাসিত জেলা পরিষদ তথা এডিসি এলাকা৷ আরও স্পষ্ট করিয়া বলিলে বলা যাইতে পারে যে ১৮ এর বিধানসভা নির্বাচন ঘিরিয়া ভূমিপুত্রদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাইয়াছে৷ কেননা, এই ভূমিপুত্ররা বিধানসভার নির্বাচনে জয় পরাজয়ের নির্ণায়ক শক্তি বলিয়া রাজনৈতিক মহলে অভিমত৷ এমন অভিমত যে শতভাগ সত্য তাহা বলিবার অপেক্ষা রাখিতেছে না৷ কেন না, ভূমিপুত্রদের হাতের মুঠোয় রহিয়াছে বিধানসভার কুড়িটি আসন৷ বিধানসভার নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রয়োজন নূন্যতম একত্রিশটি আসন৷ বিধানসভার মোট আসন হইলো ষাটটি৷ এই ষাটটি আসনের মধ্যে কুড়িটি আসন রহিয়াছে ভূমিপুত্রদের কব্জায়৷ অন্যদিকে দশটি আসন রহিয়াছে এসসি তথা তপশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত৷ সুতরাং বানরের পিঠা ভাগের মতো তিরিশটি আসন হইল সংরক্ষিত৷ আর হারাধনের দশটি ছেলের মতো বাকি রইল মাত্র তিরিশটি আসন৷
তবে কোনও রাজনৈতিক দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ২০ এবং ১০ আসনের সিংহভাগ আসন৷ বিশেষ করিয়া এসটি সংরক্ষিত কুড়িটি আসন যেকোনও রাজনৈতিক দলের পাখির চোখ৷ ১৩- এর বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট এডিসির কুড়িটি আসনের মধ্যে ঊনিশটি আসন দখল করিয়াছিল৷ জয়ের জন্য আর প্রয়োজন ছিলো মাত্র ১২টি আসন৷ কিন্তু আর ৩১টি আসনে জয় লাভ করিয়া সর্বমোট ৫০টি আসন দখল করিয়া সপ্তম বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসিয়াছে৷ এই দিকে ১৮-এর নির্বাচনের এখনো প্রায় সাতমাস বাকি৷ এরই মধ্যে রাজনীতিতে নির্বাচনি হাওয়া বহিতেছে৷ সাত মাস আগে হইতে রাজ্য জুড়িয়া নির্বাচনি হাওয়ার লক্ষণ ইহার আগে দেখা যায় নি৷ তাই ১৮এর নির্বাচন যেন এক ভিন্ন বার্তা লইয়া আসিতেছি এবং এইবার নির্বাচনের প্রধান বৈশিষ্ট হইল কংগ্রেস ও তৃণমূল ব্র্যাত্য৷ লাইম লাইটে আসিয়া পড়িয়াছে বিজেপি৷ রাজ্য জুড়িয়া ধীরে ধীরে আধিপত্য বিস্তার করিয়া বিজেপি যেন সুসংহত অবস্থানে আসিতেছে৷ চলিতেছে দল বদলের হিড়িক৷ অন্যদিকে পাহাড়েও দেখা দিয়েছে এক অস্থির পরিবেশ৷ এনসি দেববর্মার আইপিএফটি আলাদা রাজ্যের দাবিতে ১০ জুলাই হইতে রাস্তা ও রেল পথ অবরোধ করিয়াছে৷ এই অবরোধ যে আদৌ সফল হইবে না তা বলিবার অপেক্ষা রাখিতেছে না৷ তবুও এনসি দেববর্মা ভূমিপুত্রদের একাংশের মাঝে একটা জাতীয়তাবাদের জিগির তুলিয়া দিয়েছেন৷ ফলশ্রুতিতে এডিসিতে বাম রাজনীতি যেন হোঁচট খাইতেছে এবং বিজেপি ইহার ফায়দা তুলিবার জন্য উৎ পাতিয়া রহিয়াছে৷ ইহার প্রেক্ষিতে বলা যাইতে পারে যে ১৮-র নির্বাচন শাসক দলের জন্য স্বস্তি দায়ক নহে৷ এই অস্বস্তিকর বিষয়টি বারবার সিপিএমের নেতা ও মন্ত্রীদের ভাষণে ধরা পরিতেছে৷ তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করিয়া বলা যাইতে পারে যে, ১৮-এর বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়িবে৷ এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করিয়া অষ্টমবারের মতো ক্ষমতায় আসিবার জন্য শাসক দল কী ধরনের রণকৌশল ঠিক করিতেছে তাহাই এখন দেখিবার বিষয়৷ তবে ইহা সত্য যে, এডিসির কুড়িটি আসন যেন আন্দোলনের আশ্চর্য প্রদীপ৷ এই প্রদীপ যেই রাজনৈতিক দলের হাতে থাকিবে সেই দলই বাজিমাৎ করিবে৷ এখন অপেক্ষার পালা এই বাজিমাৎ কোন দল করিতেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *