BRAKING NEWS

সিবিআই আতংক

ত্রিপুরায় সিবিআই হানায় রাজনৈতিক নেতাই শুধু নয় অন্যান্য অংশের বিত্তবানরা আতংকিত হইয়া পড়িয়াছেন৷ কাহারা রোজভ্যালীর টাকা খাইয়াছেন তাহা তো অনেকেরই জানা৷ রোজভ্যালীই এই রাজ্যে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে৷ সিংহভাগ ব্যবসাই করিয়াছে এরাজ্যে৷ এই চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে এরাজ্যে কাহাদের মারাত্মক ঘনিষ্ঠতা ছিল তাহা রাজ্যের মানুষের অজানা নহে৷ সুতরাং সিবিআই সব তথ্য জানে এবং আট ঘাট বাঁধিয়াই যে নামিয়াছে সে বিষয়ে সন্দেহ থাকিবার কথা নহে৷ সিবিআই কতগুলি মামলায় সাফল্য পাইয়াছে তাহা নিয়ে জোর বিতর্ক আছে৷ ইতিপূর্বে রাজ্যে সিবিআই তদন্তে আসিয়াছিল৷ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী শ্যামহরি শর্মাকে আগরতলায় লালবাহাদূর চৌমুহনীতে একটি নির্বাচনী পথ সভায় গুলি করিয়া হত্যা করা হয়৷ রাজ্যের মানুষ তখন ভাল করিয়া আন্দাজ করিয়াছিলেন কে কাহারা এই জঘন্য কান্ড করিয়াছে৷ জনতার এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের চাপে তৎকালীন জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সুধীর মজুমজদার সিবিআই তদন্তের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিয়াছিলেন৷ সিবিআই রাজ্যে তদন্ত করিলেও খুনীরা পার পাইয়া যায়৷ এইসব ঘটনার কারেেণ সিবিআই’র প্রতি তেমন বিশ্বাস ও আস্থা কি জনগণ পোষণ করিতেছেন? চিটফান্ড তদন্তে পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই কোমড় বাঁধিয়া নামিয়াছে৷ নামীদামী অনেকেই জেলে পচিতেছেন৷ কিন্তু, আসলে এই তদন্তের নীটফল কি? কতজনকে সিবিআই দোষী প্রমাণ করিতে পারিয়াছে?
এই ত্রিপুরায় সিবিআই তদন্তের দাবীতে বিরোধীরা দিল্লীতে ধর্ণা পর্য্যন্ত দিয়াছেন৷ রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হইয়াছিল৷ ত্রিপুরায় রোজভ্যালীর সুবিশাল সাম্রাজ্য ছিল৷ এই রাজ্যে এই চিটফান্ড সংস্থার সবচাইতে বড় বাণিজ্যস্থল৷ এই রাজ্যে রোজভ্যালী কান্ডে সিবিআই তদন্তে পিছাইয়া থাকিবার তো কোনও যুক্তি নাই৷ পশ্চিমবঙ্গে চিটফান্ড তদন্তে সিবিআই’র অভিযানকে সিপিএম স্বাগত জানাইয়াছে, সন্তোষ ব্যক্ত করিয়াছে৷ কিন্তু, ত্রিপুরায় সিবিআই অভিযানের মধ্যে সিপিএম ষড়যন্ত্রের গন্ধ কেন পাইতেছেন তাহা বুঝিতে কাহারও অসুবিধা হইবার কথা নহে৷ চিটফান্ড তদন্তে সিবিআই যে আসিতেছে তাহার আগাম বার্তা দেওয়া হইয়াছিল বিজেপির পক্ষেই৷ প্রথম অভিযানেই সিবিআই মন্ত্রী বিজিতা নাথকেই কেন লক্ষ্যবস্তু করিল তাহা নিয়াও প্রশ্ণ থাকিয়া যায়৷ বিজিতা নাথ রোজভ্যালীর এজেন্ট হিসাবেও এক সময় কাজ করিয়াছিলেন৷ শুধু বিজিতা নাথ কেন রোজভ্যালীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তো অন্যান্য মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকিয়াছেন৷ তাঁহাদের উপস্থিতির কারণেই সাধারণ মানুষ চিটফান্ডে টাকা রাখিতে প্রভাবিত হইয়াছেন বলিলে বোধহয় ভুল বলা হইবে না৷ বিভিন্ন প্রভাবশালীরা চিটফান্ডের টাকা গিলিয়াছে৷ এইসব ঘটনা তো তেমন গোপনীয় নহে৷ সিবিআই অনায়াসে এইসব কীর্তিমানদের চিহ্ণিত করিতে পারিবে৷ বিজিতা নাথের চাহিয়াও আরও বেশী কলংকিতরা বহাল তবিয়তে৷ হয়তো একে একে তাহারা নোটিশ পাইবে৷ সিবিআই অভিযানের খবরে রাজ্যের বিভিন্ন মহলে বিশেষ করিয়া ক্ষমতাসীন সিপিএম দলে ভূমিকম্প দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নহে৷ বিধানসভা নির্বাচনের সামনে এই সিবিআই হানা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শংকা নিয়া আসিয়াছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *