ওয়াশিংটন, ২৫ জুন (হি.স.) : তিন দেশের বিদেশ সফরে ওয়াশিংটনে পৌঁছলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে ওয়াশিংটন ডিসি-র জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে পা রাখেন প্রধানমন্ত্রী । মধ্যরাতেই ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগানে স্বাগত জানালেন প্রবাসী ভারতীয়রা । সেখানে হাজির ছিলেন সস্ত্রীক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নভতেজ সারনা।সোমবার মোদী-ট্রাম্পের দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকটি হবে হোয়াইট হাউসে ।এরই মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে উৎসুক বলে টুইট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । হোয়াইট হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতেও মুখিয়ে আছেন তিনি।
তিন বছরে চতুর্থবারের জন্য ওয়াশিংটন ডিসি–তে পা রাখলেন নরেন্দ্র মোদী। পর্তুগাল সফর সেরে শনিবারই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে চড়ে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। মেরিল্যান্ডে ‘এয়ারফোর্স ডিস্ট্রিক্ট অফ ওয়াশিংটন’ এবং ‘ইউনাইটেড স্টেটস নেভি রিজার্ভ’–এর যৌথ ঘাঁটি ‘অ্যান্ড্রুজ’–এ পা রাখেন । ভারতে তখন সবে সকাল হলেও ওয়াশিংটনে তখন মধ্যরাত । ওই মধ্যরাতেই প্রধানমন্ত্রীকে এক ঝলক দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়রাও। তেরঙ্গা ও পোস্টার হাতে মোদী নামে ও ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা । বিমানঘাঁটি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের সঙ্গে কয়েক মিনিট কথা বলেন মোদী।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে উৎসুক বলে শনিবার রাতেই টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি লেখেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানাতে মুখিয়ে আছি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। মোদী প্রকৃত বন্ধু।’ ওয়াশিংটন পৌঁছে টুইটারে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ। আপনার সঙ্গে আলোচনায় বসতে আমিও উৎসুক।’ জানা গিয়েছে সেখানে মোদীকে দেওয়া হবে রেড কার্পেট ওয়েলকাম। এছাড়া মোদীই হতে চলেছেন প্রথম রাষ্ট্রনেতা যাঁকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পাঁচ মাস বাদে এই প্রথম হোয়াইট হাউসে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
মোদীর এই সফরে যে বিষয়গুলি সবচেয়ে গুরুত্ব পেতে চলেছে তারমধ্যে রয়েছে, ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা এবং শক্তি সংক্রান্ত চুক্তি আরও জোরদার করার লক্ষ্যে আলোচনা। সোমবার দুই রাষ্ট্রনেতার প্রথম দেখা হবে। স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসদমন নীতি তাঁদের আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে আসবে। এছাড়া বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হবে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা ২২টি আনআর্মড গার্ডিয়ান ড্রোন চুক্তিটি। মোদীর লক্ষ্য এবার বিনা বাধায় যেন সবুজসঙ্কেত পেয়ে যায় চুক্তিটি। প্রসঙ্গত, দু থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের এই ড্রোন চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেব বিশ্বমঞ্চে পরিচিত হবে ভারত।
গত শনিবার নয়াদিল্লি থেকে তিন দেশের সফরে রওনা হন নরেন্দ্র মোদী। পর্তুগাল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে তাঁর নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার কথা। গতকাল ঝটিকা সফরে পর্তুগালের সঙ্গে মোট ১১টি চুক্তি হয়েছে। তার মধ্যে ন্যানো টেকনলজি, সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া বাড়ানো, ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক, উচ্চশিক্ষা ও বাণিজ্য রয়েছে।এছাড়া, সন্ত্রাস দমন, মহাকাশ, জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণার মতো বিষয়গুলিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে ভারত ও পর্তুগাল। সেই সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য ৪০ লক্ষ ইউরোর যৌথ তহবিল গড়ে তোলার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।-