BRAKING NEWS

চট্টগ্রামে চাকমাদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশ ভিসা অফিসে ডেপুটেশন ও স্মারক

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুন৷৷ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা জনজাতিদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে

চট্টগ্রামে চাকমাদের উপর হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার আগরতলায় মিছিল৷ ছবি নিজস্ব৷

সরব হয়েছে চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া৷ বৃহস্পতিবার চাকমা সম্প্রদায়ের কয়েকশো মানুষের একটি বিক্ষোভ মিছিল আগরতলা শহর পরিক্রমা করে৷ মিছিলটি রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন থেকে রওয়ানা হয়ে সার্কিট হাউস সংলগ্ণ বাংলাদেশ ভিসা অফিসরে সামনে জড়ো হয়৷ সেখান থেকে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনারের কাছে ছয় দফা দাবি সনদ তুলে দেয়৷
দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম হল বাংলাদেশে থাকা বৌদ্ধ, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু অংশের মানুষের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা৷ দুই জুনের হামলায় যারা মারা গিয়েছেন কিংবা আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা, চট্টগ্রাম থেকে সেনা শাসন প্রত্যাহার করা, সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকার ও চাকমাদের মধ্যেকার ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তি কার্যকর করা৷
প্রসঙ্গত, আবারও মুসলিমদের আক্রমণের শিকার হতে হল সাতজন নিরীহ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে৷ তাদের আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷ এমনকি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে তিন শতাধিক বাড়ি ঘর৷ গত ২ জুনও পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলায় নারকীয় হত্যালীলা সংগঠিত হয়৷ হামলায় গুরুতর ভাবে অগ্ণিদগ্দ হয়েছেন প্রচুর মানুষ৷ যুবক বয়সীরা কোনওক্রমে জঙ্গলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হলেও মহিলা ও শিশুরা মরাত্মকভাবে জখম হয়েছেন৷
ত্রিপুরার সীমান্ত সংলগ্ণ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমাদের উপর এই হামলার ঘটনা নতুন কিছু নয়৷ মুসলিমদের আক্রমণের শিকার হয়ে প্রায়শঃই সেখানকার চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন ত্রিপুরায় চলে আসেন৷ এনিয়ে কয়েক দশক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়ে গেছে বাংলাদেশ সেনার সাথে শান্তি বাহিনীর৷ কিন্তু, ১৯৯৭ সালে তদানিন্তন বাংলাদেশ সরকারের সাথে একটি শান্তি চুক্তি হলে সংঘর্ষের সমাপ্তি ঘটে৷ এরপর আবারও যে পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি ফিরে আসছে তা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণিত৷ চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সভাপতি শোভা রঞ্জন চাকমা অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় এই বর্বরোচিত ঘটনাটি সংগঠিত হয়৷ স্থানীয় পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সহযোগিতায় সেদিন সেটেলার মুসলিমরা একটি মিছিল থেকে তিনটি উপজাতি গ্রামের তিন শতাধিক বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়৷ পাশাপাশি চলে লুটতরাজ৷ শুভ রঞ্জন চাকমা আরও বলেন, বাংলাদেশের চাকমারা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছেন৷ চিন তিববতের সঙ্গে যা করেছে তাই হচ্ছে চট্টগ্রামে৷ বাংলাদেশ সরকারের সদিচ্ছা থাকলে উপজাতিদের অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে৷ এই বিষয়ে ভারত সরকার উপজাতিদের যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে তার অনুকরণ করতে পারে বাংলাদেশ সরকার৷ শুভ রঞ্জন চাকাম জানান, শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চাকমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে৷ ফলে ইতিমধ্যেই সেই দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বহু চাকমা জনগোষ্ঠীর জনগণ আশ্রয় নিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *