BRAKING NEWS

বনেদী সুকলগুলিকে টেক্কা দিয়ে শহর ছেড়ে জেলায় গেল মেধা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ জুন৷৷ প্রকাশিত হল ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পারিচালিত ২০১৭ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল৷ ঘোষিত ফলাফলে রাজধানী আগরতলা শহরের বেশ কয়েকটি বনেদী সুকলে মেধার দেখা মিলেনি৷ কৃতি তালিকায় জেলাগুলির ছাত্রছাত্রীরা নাম তুলে নিয়েছে৷ নেতাজী সুকল, উমাকান্ত সুকল, তুলসীবতি গার্লস সুকলের মতো বনেদী সুকলগুলির ছাত্রছাত্রীরা মেধা তালিকায় নেই৷ যদিও মান রেখেছে শিশুবিহার সুকল৷ মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে অমরপুর, উদয়পুর, বিলোনীয়া, ধর্মনগর, বিশালগড় প্রভৃতি জেলা সদরের ছাত্রছাত্রীরা৷ এককথায় শহরের বনেদী সুকলগুলিকে টেক্কা দিয়ে শহর ছেড়ে জেলায় গেল মেধা৷
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৬৭৩৮ শতাংশ৷ গতবার পাশের হার ছিল ৬৬১৬ শতাংশ৷ এ বছর প্রথম দশে স্থান পেয়েছে ১৮ জন পরীক্ষার্থী৷ আজ সকালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি অধ্যাপক মিহির কান্তি দেব এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন৷
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল ৩৭ হাজার ১২২ জন ছাত্র-ছাত্রী৷ পাশ করেছে ২৫ হাজার ১১ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ৪,৩২৯ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ৫,৫২৩ জন ও তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে ১৫,১৫৯ জন৷ পাশের হার ৬৭৩৮ শতাংশ৷ ছেলেদের পাশের হার ৬৯৪২ শতাংশ ও মেয়েদের পাশের হার ৬৫৩৬ শতাংশ৷ এই পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে শিশু বিহার এইচ এস সুকলের অর্নব চৌহান৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭৷ দ্বিতীয় হয়েছে অমরপুর ইংলিশ মিডিয়াম এইচ এস সুকলেরে প্রীদিতি দাস৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৭১৷ তৃতীয় হয়েছে শিশু বিহার এইচ এস সুকলের সাগর চক্রবর্তী৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৮৷ এছাড়া, প্রথম দশে যুগ্মভাবে চতুর্থ স্থান দখল করেছে ৫ জন৷ এরা হল উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম এইচ এস সুকলের কৃষ্ণেন্দু সাহা, বিলোনীয়া গভঃইংলিশ মিডিয়াম এইচ এস সুকলের আকাশ মজুমদার, বিবেকানন্দ শিশুনিকেতনের মহুলমিতা লস্কর, শিশু বিহার এইচ এস সুকলের আবীর দেবনাথ ও হেনরি ডিরোজিও একাডেমী এইচ এস সুকলের সৌরভ দেবনাথ৷ তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৪৷ পঞ্চম হয়েছে শিক্ষা নিকেতনের রত্নদীপ চক্রবর্তী৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬১৷ ষষ্ঠ হয়েছে বৃন্তক শিক্ষা নিকেতনের দিগন্ত বৈদ্য৷ তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬০৷ সপ্তম স্থান দখল করেছে যুগ্মভাবে বিবেকানন্দ শিশু নিকেতনের পৌলমী মজুমদার ও রামকৃষ্ণে বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের সৌরভ পোদ্দার৷ তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৯৷ অষ্টম হয়েছে যুগ্ণভাবে ধর্মনগর গভঃ গার্লস এইচ এস সুকলের রিস্মিতা ধর ও শিশু বিহার এইচ এস সুকলের প্রীথি দাস৷ তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৮৷ নবম হয়েছে যুগ্মভাবে উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম এইচ এস সুকলের কুলদীপ দাস ও শিশু বিহার এইচ এস সুকলের রত্নদীপ মজুমদার৷ তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৭৷ দশম স্থান দখল করেছে যুগ্মভাবে বিশালগড় ইংলিশ মিডিয়াম এইচ এস সুকলের অরিন্দম দেবনাথ ও রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ইমন পোদ্দার৷ তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৬৷
ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত উল্লিখিত পরীক্ষায় ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় পাশের হার ৪৯০৫ শতাংশ৷ গত বছর পাশের হার ছিল ৪১৪৬ শতাংশ৷ পাশের হার বেড়েছে ৭৫৯ শতাংশ৷ এবছর পরীক্ষায় বসেছিল ৭৭৫৪ জন৷ পাশ করেছে ৩,৮০৩ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ৫৭ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ৬৭৭ জন ও তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে ২৮৬৯ জন৷
অন্যদিকে, এস টি পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৪৬৫০ শতাংশ৷ পরীক্ষায় বসেছিল ৯,৯৬৭ জন৷ পাশ করেছে ৪,৬৩৫ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ২২৪ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ৭৫১ জন ও তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে ৩,৬৬০ জন৷ ছেলেদের পাশের হার ৫০৭৬ শতাংশ ও মেয়েদের পাশের হার ৪২২৩ শতাংশ৷ এস সি পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৭২৮০ শতাংশ৷ পরীক্ষায় বসেছিল ৭,৫২১ জন৷ পাশ করেছে ৫৪৭৫ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ৯৩৫ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ১,২৯৩ জন ও তৃতীয় বিভাগে পাশ করেছে ৩,২৪৭ জন৷ ছেলেদের পাশের হার ৭৪১২ শতাংশ ও মেয়েদের পাশের হার ৭১৪৬ শতাংশ৷ এছাড়া, দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষায় বসেছিল ৭ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ২ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ৪ জন ও তৃতীয় বিভাগে ১ জন পাশ করেছে৷ নিয়মিত, অনিয়মিত, কম্পার্টমেন্টাল, এক্সটারন্যাল সব মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষায় বসেছিল ৪৯৩৭৫ জন পরীক্ষার্থী৷ পাশ করেছে ২৯২৮৯ জন৷ ছেলেদের পাশের হার ৬০৮৪ শতাংশ ও মেয়েদের পাশের হার ৫৭৭৫ শতাংশ৷
অন্যদিকে, জেলাগুলির মধ্যে পাশের হারে প্রথম দক্ষিণ ত্রিপুরা৷ পাশের হার ৭৫৬৫ শতাংশ৷ দ্বিতীয় স্থানে গোমতী জেলা, পাশের হার ৭২১৭ শতাংশ৷ তৃতীয় স্থানে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা, পাশের হার ৬৮৮৪ শতাংশ৷ এর পরেই উত্তর ত্রিপুরা জেলার স্থান, পাশের হার ৬৭০৬ শতাংশ৷ পঞ্চাম স্থানে সিপাহীজলা জেলা, পাশের হার ৬৬৪০ শতাংশ৷ ষষ্ঠ ঊনকোটি জেলা, পাশের হার ৬৪৪৮ শতাংশ৷ সপ্তম ধলাই জেলা, পাশের হার ৫৬৮৭ শতাংশ এবং অষ্টম খোয়াই জেলা, পাশের হার ৫৭০৮ শতাংশ৷
মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষায় এবার বসেছিল ৩৫ জন৷ এর মধ্যে প্রথম বিভাগে ২ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ১০ জন ও তৃতীয় বিভাগে ১০ জন মোট ২২ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছে৷ পাশের হার ৬২৮৬ শতাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *