BRAKING NEWS

রেগা নিয়ে গরিবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে আচ্ছে দিনের সরকার ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঞ্চনপুর, ২ জুন৷৷ রেগা নিয়ে গরিবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে আচ্ছে দিনের সরকার৷ শুক্রবার কাঞ্চনপুর মহকুমা হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানে এইভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ৫ বছরে আমাদের রাজ্য এম জি এন রেগায় দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছে এবং গত বছর দ্বিতীয় হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও এবার আমাদের রাজ্যে মাত্র ৪২ শ্রমদিবসের কাজ দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার৷ রেগার কাজের মাধ্যমে গ্রামের গরিব অংশের জনগণ কিছুটা বাঁচার উপায় পেয়েছিল৷ সেখানেও আঘাত এনে গরিবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে আচ্ছে দিনের সরকার৷ নানা কৌশলে রেগার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে৷
তিনি বলেন, যে কোন দেশ বা রাজ্যের উন্নয়নের চাবিকাঠি হল শান্তি – সম্প্রীতি ও সহাবস্থান৷ শান্তি না থাকলে উন্নয়নও কখনো সম্ভব নয়৷ আমাদের রাজ্যে শান্তি – সম্প্রীতি ঐক্য রয়েছে বলেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ সহ সকল বিষয়েই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার মানুষকে সুচিকিৎসা প্রদানে দায়বদ্ধভাবে কাজ করছে৷ মানুষ হাসপাতালে আসলে যাতে সঠিক পরিষেবা গ্রহণ করতে পারে তার জন্য চিকিৎসকরা সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে মানবিকভাবে দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে পরিষেবা প্রদান করতে হবে৷ কারণ চিকিৎসার জন্যই মানুষ হাসপাতালে আসেন৷ যারা ভগবান বিশ্বাস করেন তারা মনে করেন ডাক্তাররা হলেন ভগবানের মতো৷ কারণ তারা মানুষকে মৃত্যুর মুখ থোঁকে বাঁচিয়ে তুলতে পারেন৷ তাই চিকিৎসকগণকে এই বিষয়টিকে ভাবনায় রেখেই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করতে হবে৷ এটা করতে পারলেই এই ধরণের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাড়ীর সুফল ভোগ করা যাবে৷ তিনি বলেন, ডাক্তাররা চান না কোনো মানুষ মারা যাক৷ এটা তাদের শিক্ষার মধ্যে পড়েন৷ তারা মৃত্যু পথযাত্রী রোগীকে সাধ্যমত সেবা প্রদান করে সুস্থ করে তুলতে চান৷ হাসপাতালে সুচিকিৎসা দেওয়ার পরও দেখা যায় অনেক সময় কোনো কোনো রোগী মারা যায়৷ এটা প্রাকৃতিক নিয়ম মনে করে মেনে নিত হবে৷ কিন্তু দেখা যায় কোন কোন সময় রোগী মারা গেলে তার আত্মীয় স্বজনরা ডাক্তাররা সহ চিকিৎসাকর্মীদের দৈহিক ভাবে লাঞ্ছনা করেন৷ এটা কিন্তু কাম্য নয়৷ আমাদের ডাক্তারা সহ সকলের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে পরিষেবা প্রদানের জন্য সহযোগিতা করতে হবে৷ কাঞ্চনপুর মহকুমাবাসীরা এটা উপলব্দি করে ডাক্তার সহ সকল চিকিৎসাকর্মীর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস রাখেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ৭০ থেকে ৭৭ ভাগ মানুষ এখনও দু’বেলা পেট ভরে খেতে পারেন না৷ আয় উপার্জন কম৷ তাছাড়া, জিনিসপত্রের দামও আকাশছোঁয়া৷ আমরা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট দাবি করেছি সাধারণ মানুষের দু’বেলা পেট ভরে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে, এর জন্য রেশনের মাধ্যমে চাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ১৩-১৪ টি দ্রব্য সরবরাহ করতে৷ কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এর উল্টো পথেই হাঁটছে৷ আগে রেশনে মাথাপিছু ৭ কেজি করে চাল দেওয়া হতো৷ কিন্তু বর্তমানে তা কমিয়ে মাথাপিছু ৫ কেজি করেছে৷ আমরা এর প্রতিবাদ করে দাবি করেছি রেশনে মাথাপিছু ১০ কেজি করে চাল সরবরাহ করতে৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবি পূরণ না করে গরিবদের পেটে আঘাত করার চেষ্টা করছে৷ শুধু তাই নয়, রেশনের মাধ্যমে চিনি সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে৷ এই ভাবে আস্তে আস্তে পুরো রেশন ব্যবস্থাটাকেই বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচেছ৷ এছাড়াও রেশনে কেরোসিন সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা করছে৷
তিনি বলেন, সারা দেশে ধর্মীয় বিভাজনের নামে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ সংঘটিত করা হচ্ছে৷ দলিত অংশের মানুষদের নির্বিচারে আক্রমণ করা হচ্ছে৷ কে কী খাবে, কে কী শিখবে এটাও তারা ঠিক করে দিচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যেও একটি সাম্প্রদায়িক দল ধর্ম-বর্ণভেদ মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে৷ উপজাতি অংশের যুবকদের আলাদা রাজ্য গঠনের দাবীর পিছনে এরা মদত জোগাচ্ছে৷ এর বিরুদ্ধে জাতি উপজাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষকে লড়াই আন্দোলন চালাতে হবে৷ রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হতে পারে সেই জন্য সব অংশের মানুষকে সব সময় চোখ কান খোলা রাখার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *