BRAKING NEWS

দল থকে সাসপেন্ড সিপিআইএমের সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, গঠিত তদন্ত কমিটি

কলকাতা, ২ জুন (হিঃস)৷৷ ব্যক্তিগত জীবনযাত্রা নিয়ে একাধিক অভিযোগ ওঠার জেরে তিনমাসের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড

সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷

হলেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শুক্রবার সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷ দলীয় সূত্রে খবর, ঋতব্রতর বিলাসহুল জীবনযাপন নিয়ে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দলের তরফে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তদন্ত কমিটিজ্রেত রয়েছেন সাংসদ মহঃ সেলিম, মদন ঘোষ এবং মৃদুল দে৷ আগামী ২ আগস্টের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হল তদন্ত কমিটিকে৷ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সাসপেন্ড থাকবেন ঋতব্রত৷ এদিন এমনটাই দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচাযের ঘনিষ্ঠ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনযাত্রাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ওঠে৷ যারফলে দলকেও এক সময়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়৷ তবে আলিমুদ্দিন থেকে এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করা না হলেও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ঝড় উঠতে শুরু করেছে৷ এর আগেও নিজের ফেসবুক পেজে বিতর্কিত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সিপিএম এই সাংসদ৷ দলের টাকায় বাবুগিরি করার অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে৷ সূত্রের খবর, রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে আলোচিত হয়, ঋতব্রত যে কাজ করেছেন, তত্রা পার্টি লাইনের বাইরে৷ তাঁর আচরণকে পার্টি কোনওভাবেই সমর্থন করে না৷ কেন তিনি ওই ধরনের কাজ করেছেন, তার জবাব তাঁকে দিতে হবে৷ ঋতব্রতের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও বেশ কিছু দলবিরোধী কাজকর্ম নিয়ে ইদানীংকালে জেলাগুলো থেকেও একাধিক অভিযোগ এসেছে৷ ঋতব্রত ব্যবহার নিয়েও আলিমুদ্দিনে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে৷
ঘটনার সূত্রপাত, চলতি বছরের শুরুতে ম্যাচ দেখতে গিয়ে বড় বিতর্ক জড়িয়ে পড়েন সিপিএম সাংসদ৷ যা নিয়ে তোলপাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার৷ যার কেন্দ্রীয় চরিত্রে রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ এবং তরুণ সিপিএম নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গত ১২ ফেব্রুয়ারি শিলিগুড়িতে ইস্ট বেঙ্গল-মোহনবাগান খেলা দেখতে গিয়ে ঋতব্রতর তোলা একটি ছবিকে ঘিরে বিতর্ক দেখা দেয়৷ সেই ছবিতেই ফেসবুকে কমেন্ট করেন এক বক্তি৷ ঋতব্রতর পকেটে থাকা কলম এবং হাতে থাকা ঘড়ি নিয়ে ফেসবুক পোস্টে প্রশ্ণ তোলা হয়৷ ফেসবুকে ওই ব্যক্তি প্রশ্ণ তোলেন, সিপিএমের একজন হোলটাইম সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এত দামি ঘড়ি, কলম ব্যবহার করেন এই সিপিএম সাংসদ৷ দাবি করা হয়, ঋতব্রতর হাতের ঘড়িটির দাম প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা৷ আর যে স্মার্টফোনের সাহায্যে ওই ঘড়িটি, সেটি অ্যাপেলর৷ শেই স্মার্টফোনের দাম অন্তর্ত আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা৷ ঋতব্রতর পকেটে থাকা জার্মান ব্র্যান্ডের কলমটির দামও তিরিশ হাজার টাকার বেশি বলে দাবি করেন ওই ব্যক্তি৷ যদিও পাটির নিয়ম অনুযায়ী সাংসদ হিসেবে নিজের বেতনের পুরো অর্থটাই দলকে দিয়ে দেওয়ার কথা৷ দল থেকে তিনি যে ভাতা পান, সেই টাকায় এমন ব্যববহুল ঘড়ি, কলম ঋতব্রত কীভাবে ব্যবহার করেন, তা নিয়ে প্রশ্ণ তোলেন ওই ব্যক্তি৷ অভিযোগ, যে ব্যক্তি ফেসবুকে এই মন্তব্য করেন, তাঁর উপরে খেপে গিয়ে তাঁর অফিসের এইচআর বিভাগের এক আধিকারিককে ই-মেল করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে তিনি নিজেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে তাঁর আয়েড উৎস নিয়ে প্রশ্ণ তোলা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান৷ এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় দিল্লির থানায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন বলেও ঋতব্রত হুঁশিয়ারি গিয়েছেন বলে অভিযোগ৷ এই ঘটনার পর ঋতব্রতর বিরুদ্ধে দলের অন্দরে ক্ষোভের চোরাস্রোত তৈরি হয়৷ বাধ্য হয়ে দলের পক্ষ থেকে নেতাদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করে সিপিএম৷ দলের ফেসবুক ফতোয়াকে পাত্তা দিয়ে একের পর এক ছবি ও দলের একাংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিনি৷ সিপিএম নেতাদের একাংশের অভিযোগ, সাংসদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দিল্লিতে মহিলা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে৷ আলিমুদ্দিনের সিপিএমের রাজ্য দফতরে দলের ইমেজ ভেঙে সাংসদের জীবনযাত্রার মান নিয়েও ক্ষোভ জমাছিল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *