নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ এপ্রিল৷৷ একদিকে ১০,৩২৩ জন শিক্ষক নিয়ে মহা ফ্যাসাদে রয়েছে রাজ্য সরকার, তার উপর
টেট উত্তীর্ণ হয়ে নিযুক্তি পাওয়া শিক্ষকরাও তাদের অর্থনৈতিক দাবী নিয়ে আন্দোলনে নামছে৷ তাতে রাজ্য সরকার রীতিমতো ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ছে সুকল চালানোর ক্ষেত্রে৷ বিভিন্ন সুকলে এমনিতেই শিক্ষক স্বল্পতা, তার উপর চাকুরিচ্যুত হয়েছেন দশ সহস্রাধিক শিক্ষক৷ ডিসেম্বরের পর থেকে তারা আর সুকলে যেতে পারবেন না৷ নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও নানা জটিলতা রয়েছে৷ অন্যদিকে, যদি টেট উত্তীর্ণ হয়ে নিযুক্তিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বিদ্রোহ করেন তাহলে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে৷
প্রথম দফায় টেট পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত শিক্ষকদের স্থির বেতনে রাখার সিদ্ধান্ত ঘিরে ক্ষোভ বাড়ছে৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকারের বক্তব্য নিয়োগ নীতির বাইরে গিয়ে করা সম্ভব নয়৷ সদ্য টেটের মাধ্যমে স্থির বেতনে নিযুক্ত শিক্ষক গণ পরিবারের ভরন পোষণের দায়িত্ব সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন৷ স্থির বিতন হিসাবে তারা পাচ্ছেন ৭,৯৭০ টাকা৷ যার অর্ধেক টাকাই চলে যাচ্ছে যাতায়াত খরচ বাবদ৷ কারণ ডিসেম্বর মাস থেকে এই সমস্ত স্থির বেতনের শিক্ষকদের অধিকাংশই এডিসি এলাকা এবং নিজ জেলার বাইরে পোস্টিং পেয়েছেন৷ তারা জানান এই ভাবে চাকরি টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে উঠেছে৷ বাঁচার লড়াইয়ের স্বার্থেই তারা আন্দোলন মুখী হতে চলেছেন৷ তারা জানান প্রথম অবস্থায় তারা শিক্ষা অধিকর্তা দ্বারস্থ হবেন৷
অনেকের ক্ষোভ কোয়ালিটি এডুকেশনের জন্যই টেটের মাধ্যমে নিয়োগ ব্যবস্থা৷ অন্যান্য রাজ্যে টেট উত্তীর্ণদের নিয়মিত বেতন ক্রমে নিযুক্ত করা হয়৷ ত্রিপুরার ক্ষেত্রেই তা ব্যতিক্রমী৷ কেন এই রকমটা হচ্ছে এটাও তাদের জানা নেই৷ শিক্ষকদের বক্তব্য, এভাবে লিখিত পরীক্ষার পর স্থির বেতনে নিয়োগ করা যায়না৷ কতদিনের জন্য ফিক্সড পেতে কাজ করতে হবে তাও নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়নি৷ এর ফলে টেট নিযুক্ত শিক্ষক গন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন৷ শিক্ষকদের বক্তব্য, সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং অমানবিক ভাবে তাদের স্থির বেতনে নিযুক্ত করা হল৷ তাদের বক্তব্য টেটে নিযুক্ত শিক্ষকদের যোগ্যতার প্রতি প্রতিও সুবিচার করা হয়নি কারণ যারা শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হলেন তারা প্রায় সবাই স্নাতকোত্তর স্তর উত্তীর্ণ, বিএড প্রশিক্ষিত এবং পঞ্চাশ শতাংশের উপর নম্বর প্রাপ্ত৷
এইদিকে অমরপুর, জিরানীয়া, গন্ডাছড়া এবং দামছড়া টেট শিক্ষকদের এখনো বেতন হয়নি৷ তাদের বক্তব্য, গত ডিসেম্বর মাসে তারা কাছেযোগ দেন ৫ মাস হয়ে গেল এখন পর্যন্ত তারা তাদের বেতন পাবার সৌভাগ্য হয়নি৷ এসব বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী জানান, রাজ্য সরকার সব ধরনের চাকরির ক্ষেত্রে একই নিয়োগ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে৷ সবাইকেই পাঁচ বছরের স্থির বেতনের পর্বের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে৷ মন্ত্রী আরও জানান চলতি বছরেও ১৩০০ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর টেট শিক্ষক নিযুক্ত হবেন৷