BRAKING NEWS

সিলেটের শান্তি সুস্থিতি ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাচ্ছে কেন? বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরই রক্তপান করেছে বিশ্বাসঘাতকরা

৷৷ পার্থ সারথী রায়৷৷

বাংলাদেশের জন্ম লগ্ণ থেকেই প্রতিক্রিয়াশীলরা দেশের শান্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে আসছেন এবং তাঁরা সফলও হয়েছেন অনেকাংশে৷ যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের বাংলাদেশী এজেন্টদের কল্যাণে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান (দুই কন্যা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান) নিহত হন৷ ইদানিং চট্টগ্রামে চার জঙ্গি নিহত হওয়ার পর রাজধানীতে পরপর তিনটি হামলার ঘটনা সহ সিলেটে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান এবং মহিলা সহ তিনজন এনকাউন্টারে নিহত হবার ঘটনা আবারো প্রমাণ করল ওরা কত বেশী তৎপর৷ সিলেটে কিন্তু আগে এসব ঘটনা ঘটেনি৷ এখন দেখতে পাচ্ছি ওখানেও ওরা সক্রিয়৷ ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে ওখানে আবার পাকিস্তানী রাজনীতি চালু হয়৷

১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে সামরিক সরকার একটা অধ্যাদেশ জারি করেন৷ ১৯৭২ সালের অধ্যাদেশের অধীনে যেসব স্বাধীনতা বিরোধীদের কারাদন্ড হয়েছিল এবং যাদের বিচার চলছিল সামরিক আদেশের ফলে লুন্ঠন, অগ্ণিসংযোগ, ধর্ষণ, জাতীয় সম্পত্তির ক্ষতি করেছিলেন অর্থাৎ রাজাকার /আলবদর/লুঠেরা এবং দালালরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসে এবং অবৈধ কাজকর্ম জারি রাখেন৷ ৪০ বছর সাজাপ্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার আমসুল হক, যাবজ্জীবন কয়েদে রাজ্জাকার চিকন আলি সহ হাজ্জার হাজ্জার রাজ্জাকার, আলবদর সারা দেশে দাপিয়ে বেড়াতে লাগলেন৷ আর তখন শহীদ, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের পিতা-মাতা, বিধবা স্ত্রী সন্তানদের শুধু অশ্রুজল ঝরানো ছাড়া কিছুই করার ছিল না শুধু দেখে যাওয়া৷ অথচ এসবের মূল হোতা/নায়ক আর কেউ নয়, মিনি চিটাগাং-এর কালুরঘাট স্বাধীন বেতার কেন্দ্রের ঘোষক তদানীন্তন মেজর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান, যিনি তাঁর সহযোদ্ধাদের কথা একবারও স্মরণ করেননি কিন্তু তিনি দালালদের সাথে মিলে ‘বিএনপি’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গড়েন এবং দেশের শাসনভার হাতে নেবার জন্য তৎপর হয়ে উঠেন৷ তিনি দেশদ্রোহী শানু আজিজ, আব্দুল আলিমের লোকদের মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করেন৷ তিনি শাসনতন্ত্রের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে রাজাকার৷ আলবদরদের হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধ বৈধ করে দেন, কত বড় অন্যায় কর্মকান্ড৷

তখন দেশের বুদ্ধিজীবীরা এর বিরুদ্ধে সক্রিয় হননি৷ অথচ বর্তমানে কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বলে বেড়ান যে বঙ্গবন্ধু নাকি সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমা করে দেন৷ এটা ঠিক নয়, একেই ইতিহাসের বিকৃতি বলা হয়৷ ১৯৭৬ সালের আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অধ্যাদেশ ঘোষিত হয়েছিল৷ এই সুযোগেই স্বাধীনতার বিরোধী দলগুলোও সামরিক সরকারের স্বীকৃতি নিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগে নেমে যান৷ তারপর ১৯৭৭ সালের পয়লা এপ্রিল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির গদিতে বসেন৷ তারপর তিনি প্রথম যে কাজটা করলেন, তা ছিল সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ বা সংস্থান বাদ দেওয়া৷ তখন বাংলাদেশে ২১টা রাজনৈতিক দল ছিল৷ ছাত্রদের মধ্যে ৫টি দল জিয়াউরের পদাঙ্ক গ্রহণ করে৷ এই দলগুলো মুসলিম লিগ, ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লিগ, জামায়েত ইসলামী, নেজ্জাম ইসলাম ও খেলাপথে রবাণী পার্টি৷ ১৯৭২ সালে কিন্তু ঐ দলগুলো নিষিদ্ধ ছিল৷ তাই এটাই প্রমাণিত যে জিয়াউর রহমানের সময়ই ওরাপুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ তারপর থেকেই ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান৷

এখন দেখা যাচ্ছে যারা ১৯৭২ তে স্বাধীনতা বিরোধী ছিল, তারাই এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ ওরা জঙ্গি হামলা সংগঠিত করছে, বোমা হামলা চালাচ্ছে৷ বোমার আস্তানা পাওয়া যাচ্ছে৷ তাছাড়া ওরা সংগঠিত ভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের উপর হামলা চালাচ্ছে৷ খবরে প্রকাশ যে, পাকিস্তান থেকে জঙ্গি নেতাদের বাংলাদেশে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ ঢাকায় তারা ইসলামী ছাত্র শিবিরের বার্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং হামলার ছক তৈরি করেন৷ ওরা কিন্তু দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও তৎপর৷ বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোর প্রয়াস চলছে৷ ভেবে অবাক হচ্ছে ওরা দেশে এসে কিভাবে এসব করে যাচ্ছে৷ সরকারই ঘুমে৷ দেশে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছে৷ বাংলাদেশের জঙ্গি ধর্মীয় নেতারাও মাঝে মাঝে পাকিস্তান যাওয়া আসা করেন৷ সবশেষে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারকে সজাগ থাকতে হবে৷ যাতে সুসম্পর্ক বজায় থাকে৷ আন্তর্জাতিক সীমানায় কড়া প্রহরার প্রয়োজন ওদের গতিবিধি রুখতে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *