BRAKING NEWS

সরকারী আইনজীবীর অব্যাহতি ইস্যুতে সরগরম বিধানসভা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ ফেব্রুয়ারি৷৷ পরিমল সাহা হত্যা মামলায় সরকারি উকিলের ভূমিকা নিয়ে বিরোধীরা আইনমন্ত্রীর স্পষ্টীকরণে সন্তুষ্ট হতে পারেননি৷ এমনকি, অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে এই ইস্যুতে বিরোধীদের হৈহট্টগোলে অধিবেশন দশ মিনিটের জন্য মুলতুবি ঘোষণা করা হয়েছিল৷

এদিন বিরোধীরা বিধানসভায় দাবি জানান, পরিমল সাহা হত্যা মামলায় সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ ঘোষকে অবিলম্বে অব্যাহতি দিতে হবে৷ আইনমন্ত্রী বিরোধীদের এই দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়ে জানান, বহু মামলায় শ্রীঘোষ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন৷ সুতরাং তাঁকে সরকারি আইনজীবীর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রশ্ণই আসে না৷ এনিয়ে বাদানুবাদের মধ্যে বেলা একটা বেজে গেলে অধ্যক্ষ প্রথমার্ধের অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন৷ কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের অধিবেশন শুরু হতেই কংগ্রেসের তিন বিধায়ক পুনরায় এই ইস্যুতে আলোচনার জন্য দাবি জানান এবং আইনমন্ত্রীকে সভায় আসতে অনুরোধ করেন৷ কিন্তু উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে স্পষ্ট জানিয়ে দেন এখন এই বিষয়ে আলোচনার কোন সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়৷ তাতে, বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ প্রচন্ড হৈহট্টগোলের মাঝেই উপাধ্যক্ষ বাজেট আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দেন৷ সেমত ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্য সুধন দাস ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু করেন৷ তখনই বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন৷ এক সময় পরিস্থিতি ভীষণ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে উপাধ্যক্ষ দশ মিনিটের জন্য অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন৷

এদিন বিধানসভা অধিবেশনে উল্লেখ পর্বে পরিমল সাহা হত্যা মামলায় সরকারি আইনজীবীর ভূমিকা নিয়ে বিরোধী বেঞ্চে কিছুটা উত্তেজনা দেখা যায়৷ বুধবার একটি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত পরিমল সাহা হত্যা মামলা সংক্রান্ত সংবাদের বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছিলেন বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা৷ আজ আইনমন্ত্রী তপন চক্রবর্তী স্পষ্টীকরণ দিয়ে জানান, এবিষয়ে আইন সচিবের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে৷ তিনি পিপি অভিজিৎ ঘোষের বক্তব্য তুলে ধরে জানান, মামলায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় জামিনের আবেদনের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য করতে পারেননি৷ আইনমন্ত্রী এও জানান, আদালত তাঁর কাছে জামিনের বিষয়ে কিছুই জানতে চাননি৷ তাতে বিরোধী বেঞ্চ পিপি’র ভূমিকায় সমালোচনায় মুখর হন৷

বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ বলেন, জামিনের আবেদনের বিষয়ে আপত্তি থাকলে সেটা বিরোধী পক্ষের আইনজীবীকে সম্মতি রয়েছে কিনা তা জিজ্ঞেস করতে হয় না৷ জামিনের বিরোধীতা স্বাভাবিক নিয়মেই বিরোধীপক্ষের আইনজীবী করেন৷ কিন্তু এই মামলায় সরকারি আইনজীবী কোন আপত্তি জানাননি৷ শুধু তাই নয়, এমন একটা স্পর্শকাতর মামলায় যা অনেকদিন আগেই উচ্চ আদালতে শুনানির দিন নির্দিষ্ট হয়ে রয়েছে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখা তাঁর দায়িত্ব ছিল৷ বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বলেন, সরকারি আইনজীবীদের ভূমিকা এমন হলে রাজ্যে বিচার পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে৷ বিরোধীরা আইনমন্ত্রীর কাছে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ ঘোষকে অব্যাহতি দেওয়ার জোরালো দাবি জানান৷ কিন্তু আইনমন্ত্রী বিষয়টি উড়িয়ে দিলে বিরোধীরা চটে লাল হয়ে যান এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তাতে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ এই পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ হস্তক্ষেপ করেন এবং বিরোধীদের বিক্ষোভের হাত থেকে আইনমন্ত্রীকে বাঁচিয়ে দেন৷ তিনি সভায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন এনিয়ে আরো আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে না৷ কারণ, যে স্পষ্টীকরণ বিরোধীরা চেয়েছিলেন আইনমন্ত্রী সেটা দিয়েছেন৷ এই কথা বলে বেলা একটা বেজে যাওয়ায় প্রথমার্ধের অধিবেশন অধ্যক্ষ মুলতুবি ঘোষণা করেন৷

কিন্তু পরিমল সাহা হত্যা মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পেরে বিরোধীরা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধেও বিষয়টি উত্থাপন করে বিক্ষোভ দেখালে উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর দশ মিনিটের জন্য সভা মুলতবি করে দেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *