নিয়োগ ও বদলী নীতি নিয়ে বিধানসভায় বিরোধীদের তোপের মুখে সরকার পক্ষ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ ফেব্রুয়ারি৷৷ বদলি এবং নিয়োগ নীতি নিয়ে বিরোধীরা রাজ্য সরকারকে চাপে রাখার একটা প্রয়াস নিয়েছিলেন৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কৌশলে বিরোধীদের সমস্ত প্রশ্ণের জবাব দিয়েছেন৷ পাশাপাশি বদলি এবং নিয়োগ নীতি নিয়ে তাঁর যুক্তি বৃহস্পতিবার বিধানসভায় প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে৷
এদিন বিধানসভায় প্রশ্ণোত্তর পর্বে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বদলি নীতি নিয়ে প্রশ্ণ উত্থাপন করেন বিধায়ক গোপাল রায়৷ প্রশ্ণের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন বদলি নীতি নেই৷ তবে, বদলির ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশাবলী রয়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত প্রশ্ণ ছুঁড়ে দিয়ে গোপাল রায় বলেন, এমন বহু কর্মচারী রয়েছেন যারা একই জায়গায় ২০/২৫ বছর ধরে চাকুরি করছেন৷ অতিরিক্ত প্রশ্ণের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহিলা, মুসলিম সম্প্রদায়ের কর্মচারী এবং বিকলাঙ্গ সন্তান রয়েছে এমন কর্মচারীদের নিজ নিজ এলাকায় চাকুরী করছেন৷ গোপাল রায় আবার একটি অতিরিক্ত প্রশ্ণ এনে জানতে চান, সুনির্দিষ্ট বদলি নীতি প্রণয়ন করা হবে কিনা৷ উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বদলি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কোন আপত্তি নেই, তবে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যাও রয়েছে৷ বদলি নীতির বিরুদ্ধে আদালতে সামিল হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে৷ সেজন্যই বদলি নীতির বদলে রাজ্য সরকার বদলির ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশাবলী রেখেছে৷
রাজ্য সরকারের নিয়োগ নীতি সম্পর্কে প্রশ্ণ তুলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ৷ প্রশ্ণের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের নিয়োগ নীতি সংশোধন করে চাকুরির আবেদনকারীর পরিবারে চাকুরিরত কোন সদস্য রয়েছেন কিনা সেটা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পাবলিক নোটারি কর্তৃক প্রদত্ত এফিডেভিট বাধ্যতামূলক করেনি৷ বিধায়কের অতিরিক্ত প্রশ্ণে জানতে চান উচ্চ আদালতের নির্দেশে নিয়োগ নীতি ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম সংশোধনীর পর এখন পর্যন্ত কতবার তা বদল করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, কতবার বদল হয়েছে সেটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না৷ তবে, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশক্রমে রাজ্য সরকার ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি নিয়োগনীতি বদল করেছে৷ কিন্তু বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য মেনে নিতে পারেননি৷ তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখবেন এখন পর্যন্ত নিয়োগ নীতি তিনবার বদল হয়েছে৷ তিনি প্রশ্ণ তুলে বলেন, কোন বাড়িতে সরকারি চাকুরিরত কেউ থাকলে অন্য সদস্য চাকুরি পাবেন না এর পেছনে যৌক্তিকতা কোথায়৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিয়োগের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে৷ এর ভিত্তিতেই সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ করা হয়৷ বিধায়ক আবারও জানতে চান, ভারত সরকারের পদ্ধতি অবলম্বন করে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা চালু করা হবে কিনা৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভারত সরকারের তরফে নির্দেশিকা এসেছে, তাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ঐ পদ্ধতি চালু করা যায় কিনা তা দেখার জন্য৷ রাজ্য সরকার এই পদ্ধতি চালু করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *