BRAKING NEWS

শালবাগানে যুবকের লাশ, বীরগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, খোয়াইয়ে গণধোলাইয়ে নিহত বাংলাদেশী চোর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/খোয়াই,২০ ফেব্রুয়ারী৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে৷ একজন মহিলা ও দুইজন পুরুষ৷ নিহতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশী নাগরিক৷ চুরি করতে এসে গণধোলাইয়ে নিহত হয়েছে৷ অন্যদিকে এক যুবক ও গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে৷

শালবাগান ডাম্পিং স্টেশনের সামনে এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ কৃষ্ণনগর ঠাকুরপল্লী এলাকার বাসিন্দা তন্ময় সূত্রধরের(২৭) মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশের বক্তব্য, দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে৷ কিন্তু তন্ময়ের পরিবারের অভিযোগ, তাকে খুন করা হয়েছে৷ কারণ, তার সাথে ৫০ হাজার টাকা ছিল৷ সে টাকা গায়েব বলে তন্ময়ের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন৷ শুধু তাই নয়, তার সাথের বন্ধুরাও বেপাত্তা হয়ে গেছেন৷ এর থেকেই তন্ময়ের পরিবারের সদস্যদের ধারণা তাকে খুন করা হয়েছে৷

জানা গেছে, রবিবার তন্ময় সূত্রধর বন্ধুদের সাথে সিধাই মোহনপুরে গিয়েছিলেন৷ রাত আনুমানিক পৌনে একটা নাগাদ শালবাগান ডাম্পিং স্টেশনের সামনে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় জনগণ৷ তার মুখ পুরোটাই থেঁতলে গেছে এবং বাইকটিও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ খবর পেয়ে এনসিসি থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জিবি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে৷ পুলিশের বক্তব্য, দুর্ঘটনাতেই তন্ময়ের মৃত্যু হয়েছে৷ তবে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে৷ কিন্তু পুলিশের এই বক্তব্য মানতে নারাজ তন্ময়ের পরিবারের সদস্যরা৷ তাদের ধারণা তন্ময়কে খুন করা হয়েছিল৷ কারণ যে বন্ধুদের সাথে গতকাল তন্ময় সিধাই মোহনপুর গিয়েছিলেন তাদের কোন হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না৷ এমনকি তন্ময়ের সাথে নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিল৷ সেটাও তার কাছে পাওয়া যায়নি৷ এর থেকেই তন্ময়ের পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত যে তাকে খুন করা হয়েছে এবং ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ পুলিশ এই ঘটনায় একটি মামলা নিয়েছে৷

আবারও এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু৷ ঘটনাটি ঘটেছে বীরগঞ্জ থানার অধীন পশ্চিম ডালাক গ্রামে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷ মৃতার নাম ঝুমা দাস (৩২)৷ স্বামীর নাম কিরিট দাস৷ সোমবার সকালে ঝুমার ফাঁসিতে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷

সংবাদে প্রকাশ, স্বামীর বাড়িতেই ঐ গৃহবধূর ফাঁসিতে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ স্বামীর বক্তব্য, রবিবার রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে যায়৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে তারা গৃহবধূকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান বাড়ির লোকজন৷ সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় বীরগঞ্জ থানায়৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ণ নেই৷ ধরণা করা হচ্ছে রবিবার রাতে কোন এক সময় ঐ গৃহবধূ ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছে৷ তবে এটি আত্মহত্যা না খুন এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, গত কিছুদিন যাবৎ তাদের পরিবারে ঝামেলা চলছিল৷ সম্ভবত পারিবারিক ঝামেলার কারণেই ঝুমা দাস আত্মহত্যা করেছে৷ তবে গোটা বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতেই৷ যদিও পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে৷ স্বামী সহ পরিবারের অন্যান্যদের সাথে কথা বলেছে পুলিশ৷

এদিকে, আবারও খোয়াইয়ে গ্রামবাসীদের গণধোলাইয়ে মৃত্যু হয়েছে এক চোরের৷ জানা যায় খোয়াইয়ের সিপাইাহওর গ্রামের পঞ্চবটী এলাকায় সোমবার কাক ভোরে কয়েকজন জেলে মাছ ধরতে বেরিয়ে পাঁচজনের একটি চোরের দলকে দেখতে পায়৷ জেলেরা চোরের দলকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে করতে চোরের দলের পেছনের ধাওয়া করে৷ জেলেদের চিৎকারে গ্রামের মানুষ বেরিয়ে পড়ে৷ এর মধ্যে ৪ চোর পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গ্রামবাসীরা ১ চোরকে পাকড়াও করে উত্তম মধ্যম শুরু করে৷ সকাল আটটায় খোয়াই থানায় ঘটনার খবর এলে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখতে পায় গ্রামবাসীদের উত্তম মধ্যমে মৃত্যু হয়ে গেছে চোরের৷ পুলিশ চোরের মৃতদেহ খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরাও তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে৷ মৃত চোরের কোন পরিচয় জানা যায়নি৷ তবে বাংলাদেশী চোর বলেই গ্রামবাসীদের অভিমত৷ প্রায় প্রতিদিন এই এলাকায় বাংলদেশী চোরের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে গ্রামবাসীরা৷ বাংলাদেশি চোরের কারণে গবাদি পশুপালন মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মৃত চোর একটি লুঙ্গি পরিহিত ছিল৷ চোরের কাছ থেকে বাংলদেশের আকিশ বিড়ির প্যাকেট পাওয়া গেছে৷ ফলে পুলিশ সহ এলাকার লোকদরে অনুমান মৃত চোর বাংলদেশি নাগরিক বলেই৷ আর কাক ভোরে জেলেরা মাছ ধরতে বেরিয়ে চোরের দলকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীদের নিয়ে চোরের দলের পেছনে ধাওয়া করে৷ চোরের দলের চার স দস্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও এক চোরকে গ্রামবাসীরা আটক করে ফেলে এবং গ্রামের লোকেরা বাংলাদেশী চোরকে গণ প্রহার দেয়৷ এতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে অজ্ঞাত ঐ চোরের৷ ঘটনায় সাত সকালে সিপাইহাওর এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *