BRAKING NEWS

পাঁচ রাজ্য পথ দেখাইবে?

Features of Indian Electionউত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, গোয়া, মণিপুর পাঞ্জাব সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহেই ঘোষণা হইয়া যাইবে বলিয়া ধারণা করা যাইতেছে৷ পাঁচ রাজ্যের ভোট ঘোষণার জন্য রাজ্যগুলিকে তৈরি থাকিতে বলিয়াছে নির্বাচন কমিশন৷ এই নির্বাচন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সামনে বিরাট অগ্ণিপরীক্ষা৷ বড় রাজ্য উত্তবপ্রদেশের দিকে বিশেষ নজর গোটা দেশেরই৷ গত লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যই উজার করিয়া ভোট দিয়াছিল বিজেপিকে৷ এই রাজ্যে আশাতীত সাফল্যের কারণেই বিজেপি অভূতপূর্ব জয় পায়৷ সেই উত্তরপ্রদেশে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জেরবার সমাজবাদী পার্টি৷ পার্টি সুপ্রিমো মুলায়ামের পুত্র মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষিক্ত হইয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষে লিপ্ত হইয়া পড়েন৷ কাকা শিব পালের সঙ্গে প্রকাশ্য মঞ্চে হাতাহাতির মতো ঘটনায়ও জড়াইয়া যান৷ মুলায়েম কড়া হাতে দলের রাশ ধরিতে গিয়া পুত্র অখিলেশকে দূরে সরাইয়া প্রার্থী তালিকাও ঘোষণা করিয়া দিয়াছেন৷ পুত্র অখিলেশের উপর যে মুলায়ম বিরক্ত তাহাই প্রকাশ পাইয়াছে৷ এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি কতখানি ভোট টানিতে পারিবে এই প্রশ্ণ উঠিতেছে৷ বহুজন সমাজ পার্টি সুপ্রিমো মায়াবতীর সামনে আয়কর দপ্তরের নোটিশ ঝুলিতেছে৷ এই অবস্থায় তিনি কতখানি সোজা হইয়া ময়দানে থাকিতে পারিবেন সেই প্রশ্ণ আছে৷ এরাজ্যে কংগ্রেস তো ডুবন্ত নৌকা৷ এজন্য মুলায়েমও জোটে আগ্রহী হন নাই৷ বাকী চার রাজ্যে নোট বাতিল ইস্যুও কোন্ পথ ধরিবে বলা মুশকিল৷ উত্তরপ্রদেশে নোট বাতিলের ফলে নির্বাচনে টাকার খেলা কতখানি হইবে? একই প্রশ্ণ বাকী রাজ্যের ক্ষেত্রেও৷
নোট বাতিল ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি জোরদার ঐক্যের পথে আগাইতে পারিতেছে না৷ এই জোটে তো বড় বড় দলগুলির অংশ গ্রহণ নাই৷ বরং ছোট দল সিপিএম ছিটকাইয়া গিয়াছে৷ সক্রিয় আন্দোলনে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসকেই দেখা যাইতেছে৷ নোট বাতিল ইস্যুতে দেশ জুড়িয়া গণবিক্ষোভ তেমন গড়িয়া তোলা যায় নাই৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি কালো টাকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়াছেন এই বক্তব্য সাধারণ মানুষের সমর্থন পাইয়াছে৷ কালো টাকা উদ্ধারে নোট বাতিল যে সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে নাই বিরোধীরা তথ্যভিত্তিক তুলিয়া ধরিতে ব্যর্থ হইতেছে৷ নোট বাতিল ইস্যু নির্বাচনে বিজেপিকে ডুবাইবে এমন ভাবিবার পিছনে জোরদার যুক্তি নাই৷ বিরোধীরা এমন জোরদার আন্দোলন গড়িয়া তুলিবার আগেই মোদি কী কৌশল গ্রহণ করেন তাহাই এখন দেখিবার বিষয়৷ একথা বিনা দ্বিধায় বলা যাইতে পারে যে, পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের আগে হিসাব কষিয়াই এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্য্যকর করিয়াছেন মোদি৷ নির্বাচন মানেই টাকার খেলা৷ নির্বাচন কমিশনের যতোই বিধিনিষেধ থাকুক না কেন নির্বাচনে টাকার খেলা রোখা সম্ভব হইয়াছে এমন দাবী মানিয়া নেওয়া যায় না৷ নোট বাতিলের কারণে রাজনৈতিক দলগুলির সামনে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিবে না এমন কথা কি জোর দিয়া বলা যায়?
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল আগামী দিনে দেশের রাজনীতির দিশা আনিয়া দিবে? প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির গ্রহণযোগ্যতা কতখানি এই নির্বাচনী ফলাফল বোধহয় স্পষ্ট করিবে৷ মমতা ও রাহুলের নেতৃত্বে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে না পারিলে এবং বৃহত্তর জনগণকে সামিল করিতে না পারিলে আগামী দিনে মোদির বিজয় রথ দূর্বার হইয়া উঠিবে৷ সেখানে যদি স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব মাথাচাড়া দিয়া উঠে? এই প্রশ্ণের মুখেই আজ দেশ দাঁড়াইয়া আছে৷ দেশের মানুষের বিচক্ষণতা, দেশপ্রেম কতখানি এই বিষয়েও আজ প্রশ্ণ জাগে৷ এক কঠিন অগ্ণিপরীক্ষার সামনে আজ গোটা দেশও৷ ‘ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে৷’ এই স্বপ্ণ কি কোনও দিন পূরণ হইবে না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *