BRAKING NEWS

বিড়ম্বনায় রোগীরা

চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্যাথলজিষ্ট ও রেডিওলজিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা নতুন করিয়া উল্লেখের প্রয়োজন নাই৷ রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে তাহাদের রিপোর্টের উপরই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়া থাকেন৷ আজকের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই প্যাথলজিক্যাল রিপোর্টের উপরই ডাক্তারদের ষোল আনা নির্ভর করিতে হয়৷ এই অবস্থায় প্যাথলজিক্যাল লেবরেটরীগুলিতে যদি দক্ষ পরীক্ষক না থাকেন, সেখানে যদি ফাঁকিবাজী, রোগী ঠকানোর কারবার চলে তাহা হইলে সেক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুরা কিছুই করিতে পারিবেন না৷ বরং বলা যাইতে পারে, ভুল রিপোর্টের কারণে রোগ নিরাময় দূরের কথা রোগীর মৃত্যু পর্য্যন্ত হইতে পারে৷ একথা সত্যি যে, ত্রিপুরায় প্যাথলজিক্যাল লেবরেটরীর রিপোর্ট সম্পর্কে সংশয়, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দানা বাঁধিবার অনেক কারণ রহিয়াছে৷ ত্রিপুরার রিপোর্ট নাকচ হইয়া যায় বহিঃরাজ্যে পরীক্ষার পর৷ সোজা কথায়, একশ্রেণীর প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরীগুলি রোগী মারার কারখানায় পরিণত হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ উঠিয়াছে৷ শনিবার আগরতলায় প্যাথলজিষ্ট ও রেডিওলজিষ্টদের এসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী ম্যাড়মেড়ে বক্তব্য রাখিয়াছেন৷ প্যাথলজিক্যাল সার্ভিস যে আজ ভয়ংকর বিতর্কের মধ্যে সে বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোনও রকম বক্তব্যই রাখেন নাই৷ তিনি যাহা বলিয়াছেন তাহার সার কথা হইল প্যাথলজিষ্ট ও রেডিওলজিষ্টদের কাজের গুণমান বাড়াইতে হইবে৷ আজকের ত্রিপুরায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্যাথলজিক্যাল সমস্যা যে গুরুতর সে বিষয়ে তিনি কোনও আলোকপাত করেন নাই৷
রোগীদের এই রিপোর্ট বাণিজ্যে একশ্রেণীর চিকিৎসকরাও জড়িত৷ ডাক্তারবাবুরা মনের সুখে নানা পরীক্ষার জন্য লিখিয়া দেন রোগীদের৷ মোটা টাকা গুনিয়া দিতে হয় রোগীদের৷ এই টাকার ভাগ নাকি চিকিৎসকদের পকেটে ঢুকে৷ সোজা কথায়, এইসব প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট নিতে গরীব অংশের রোগীদের বিড়ম্বনার মধ্যেই পড়িতে হয়৷ ত্রিপুরায় নির্ভরযোগ্য প্যাথলজি কয়টা আছে সেই প্রশ্ণ উঠিয়াছে৷ এইসব প্যাথলজিকেল ল্যাবরেটরীগুলির উপর রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তেমন নজরদারী আছে বলিয়া তো মনে হইতেছে না৷ রাজ্যে উন্নত প্যাথলজিক্যাল রিপোর্টের সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে বহির্রাজ্যের একটি সংস্থাকে রাজ্য সরকার বিল্ডিং ইত্যাদির ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছে৷ রাজ্যে অবস্থিত এই প্যাথলজিক্যাল ইউনিটটিতে রোগীরা পারতপক্ষে যাইতে চান না৷ সাধারণ পরীক্ষাগুলি হয়৷ কিন্তু, জটিল পরীক্ষার সুযোগ এখানে নাই৷ এই প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরী দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করিতেছে৷ কিন্তু, ত্রিপুরায় চলিতেছে নমোঃ নমোঃ করিয়া৷ এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য যে ব্যর্থ হইয়াছে তাহাও প্রমাণিত৷ শহর আগরতলায় কয়েকটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরী পরীক্ষার জন্য নেওয়া টাকার কোনও রসিদ দেয় না৷ এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের নজরে থাকা সত্বেও কোনও প্রতিকার নাই৷
ত্রিপুরার এক বিরাট অংশের রোগী বহির্রাজ্যে যাইতেছেন৷ প্যাথলজিক্যাল রিপোর্টের সমস্যা এক্ষেত্রেও বিরাট ভূূমিকা রহিয়াছে৷ ত্রিপুরায় সঠিক চিকিৎসার স্বার্থে প্যাথলজিক্যাল ক্ষেত্রকে আরও বেশী উন্নতমানের নিতে হইবে৷ এক্ষেত্রে নামকরা চিকিৎসকদের ব্যবহার করিয়া রিপোর্ট দেওয়া হয়৷ আসলে, দেখাই নাই ওই চিকিৎসকদের৷ এইভাবে রোগীদের জীবন নিয়া খেলা বন্ধ করিতে না পারিলে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা রোধ করা যাইবে না৷ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ত্রিপুরা বিরাট সাফল্য খঁুজিতেছে৷ এই স্বপ্ণ কোনও দিন কি সফল হইবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *