BRAKING NEWS

শিল্প স্বপ্ণ বাতিল

রাজ্যে শিল্প নিয়া মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তীব্র হতাশা ব্যক্ত করিয়াছেন৷ ত্রিপুরায় শিল্প জয়যাত্রা যে সূচিত হইবার সম্ভাবনা নাই, তাহা খোদ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কবুল করায় কার্য্যত শিল্প নিয়া বাম সরকারের ব্যর্থতা আরও প্রকট হইয়াছে৷ শনিবার আগরতলায় ত্রিপুরা স্টেট ইঞ্জিনীয়ার্স এসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করিয়া বলেন, আমাদের রাজ্যে শিল্পের বিকাশ হইতে অনেক সময় লাগিবে৷ তাঁহার মতে, বেসরকারী পঁুজি এই অঞ্চলে, বিশেষ করিয়া ত্রিপুরায় ঢালাও ভাবে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নাই৷ ফলে এ রাজ্য শিল্পে স্বয়ংম্ভর হইয়া উঠিবে কিনা এই সন্দেহ পোষণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে, কৃষিতে সাফল্যের আশা ব্যক্ত করিয়া রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করিয়াছেন৷ ত্রিপুরায় কৃষিই অর্থনীতির মূল ভিত্তি৷ ত্রিপুরা কৃষিতে পিছাইয়া রহিয়াছে বলিয়া স্বীকার করিয়া সাফল্যের বিষয়ে আশা ব্যক্ত করায় রাজ্যের মানুষের সামনে নতুন দিশা দেখা যাইতে পারে৷ কিন্তু কিভাবে? মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে কৃষি বিপ্লবের সম্ভাবনার বিষয়ে জোর সওয়াল করিতে পারিলেন না৷ একথা মানিয়া নিতেই হইবে যে, ত্রিপুরায় প্রায় নববুই শতাংশ মানুষই কৃষিজীবী৷ কিন্তু, এখানে কৃষির সর্বনাশের জন্য সবচাইতে বেশী দায়ী সিপিএম বা বামেরা৷ এরাজ্যে ভূমি সংস্কারের ডাক তুলিয়া বামেরা হঠকারী পথে আগাইয়াছিলেন৷ বর্গাদার জোতদার চিহ্ণিত করিতে গিয়া রাজনীতির অক্টোপাশে বন্দী করিয়া ফেলে কৃষকদের৷ লাঙল যাহার জমি তাহার শ্লোগানের সাফল্য তো মিলে নাই৷ মধ্যবিত্ত গরীব অংশের কৃষকরা বিভিন্ন কারণে নিজের জমি বর্গা দিয়া দেয়৷ কিন্তু, লাঙল যাহার জমি তাহার দাবী উঠিতেই জমি বর্গা দেওয়া প্রাায় বন্ধ হইয়া যায়৷ তাহার উপর আছে শ্রমিক সমস্যা৷ কৃষি কর্মীর সংখ্যা একেবারে শূন্যের কোটায় গিয়া দাঁড়াইয়াছে৷ ফলে, কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রে চাষাবাদ ছাড়িয়া অন্য ব্যবসায় মনোনিবেশ করিতে বাধ্য হইয়াছেন৷ কাজ না করিয়া বা নামে মাত্র কাজ করিয়া রেগার কাজে শ্রমিকদের আকর্ষণ বেশী৷ আসলে রেগা মানেই হইল শ্রমিকদের কর্মবিমুখ করিয়া রাখা৷ ত্রিপুরার শ্রমিকদের কর্মবিমুখতার কারণে রাজ্যের ছোট শিল্পগুলি পর্য্যন্ত ধুকিতেছে৷ যেসব শিল্প রাজ্যে টিমটিম করিয়া চলিতেছে তাহারাও বহিঃরাজ্য হইতে শ্রমিক আনিতেছে৷
শিল্প বা কৃষি উন্নয়নের প্রাথমিক শর্তই হইতেছে উপযুক্ত শ্রমিক প্রাপ্তি৷ কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়াছে স্থানীয় শ্রমিক দিয়া শিল্প ও কৃষিতে কাঙ্খিত সাফল্য মিলিবে না৷ যতদিন স্থানীয় শ্রমিক মিলিবে না, যতদিন শ্রমিকদের উপর হইতে রাজনীতির থাবা না সরিবে ততদিন কৃষিই হউক আর শিল্পই হউক সাফল্য পাওয়া যাইবে না৷ এক সময় যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার কথা বলিয়া রাজ্যে শিল্প বিপ্লবের প্রধান অন্তরায় বলিয়া দাবী করিয়াছে প্রায় সবকটি দল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *