BRAKING NEWS

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের মতে একই দিনে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিক রয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ অক্টোবর৷৷ একই দিনে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন হউক চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ কিন্তু এই পদ্ধতির যেমন ইতিবাচক দিক রয়েছে, তেমনি নেতিবাচক দিকও রয়েছে বলে তিনি মনে করেন৷ শনিবার নির্বাচন গণতন্ত্রের জনপথ শীর্ষক গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একদিনে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে টাকা বাঁচানো যেমন সম্ভব, তেমনি সময়েরও সাশ্রয় হবে৷ তবে, চট করে এই সিদ্ধান্তে আসা জটিল ব্যাপার৷ কারণ, পাঁচ বছর বাদে বাদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ মাঝপথে কোন রাজ্যের সরকারের পতন হলে মারাত্মক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে৷ ফলে, সমস্ত দিক দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটা সময়ে এই পদ্ধতি নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন৷
রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম নির্বাচন আধিকারিক হিরন্ময় চক্রবর্তীর লেখা গ্রন্থটিতে দেশের নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ সে বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, নির্বাচনে প্রচুর দূর্ণীতি হচ্ছে৷ ফলে, এই দূর্ণীতি আটকাতে নির্বাচনের ব্যয় রাষ্ট্রকেই গ্রহণ করা দরকার৷ তাতে নির্বাচনে দূর্ণীতি বন্ধ করা না গেলও বহুলাংশে প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন৷ এছাড়া যেদিন ভোট সেদিন গণনা, মুখ্যমন্ত্রী এটিকে আদর্শ প্রস্তাব বলে মন্তব্য করেছেন৷ কারণ তাতে সন্দেহমুক্ত থাকা যায় বলেও তিনি মনে করেন৷ তাঁর মতে, এই পদ্ধতি অবলম্বন করা গেলে ঝামেলা মুক্ত থাকা যায়৷ কারণ, কখনো কখনো নির্বাচন শেষ হওয়ার মাসাধিককাল পর গণনা হলে একদিকে রাজনৈতিক দলগুলি এবং সাধারণ জনগণ উৎকন্ঠায় থাকেন, তেমনি প্রশাসনকেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে দিনরাত মাঠে পড়ে থাকতে হয়৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৭ সালের আগে পর্যন্ত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট একসাথেই হতো৷ কিন্তু ১৯৬৭ সালের পর এই পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসে৷ তবে, আবার যদি সেই পদ্ধতি চালু করা হয় তার অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই পদ্ধতি অনুসরণ করার হলে বিরাট ব্যয় থেকে দেশ বেঁচে যাবে৷ তার সাথে অনেক সময়ের সাশ্রয় হবে৷ সেই দিক দিয়ে এটি একটি মডেল প্রস্তাব বলে তিনি মন্তব্য করেন৷
তবে, এই পদ্ধতির অনেক নেতিবাচক দিকও রয়েছে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, চট করে এই সিদ্ধান্তে আসা জটিল ব্যাপার৷ এবিষয়ের গভীরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাঁচ বছর বাদে বাদে নির্বাচন হয়৷ তাতে কখনো কখনো দেখা যায়, একটা দল ভেঙ্গে আরেকটি দল গঠিত হচ্ছে৷ তারা সরকার গঠন করে৷ কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরকারের পতন ঘটলে তখনই মারাত্মক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী তখন হয়ত সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে৷ কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ক্ষেত্রেও অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে৷ ফলে, সংবিধানেরও সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে৷ আবার যদি, কেন্দ্রের সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পতন তখন কি করা হবে৷ তাই, মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন খুব সহজেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করার যাবে না৷ কারণ, এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে একসাথে আসতে হবে৷ এদেশে বর্তমানে জাতীয় দলের সংখ্যা খুবই কম৷ কিন্তু আঞ্চলিক দলের সংখ্যা প্রচুর৷ তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে৷ সবমিলিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে তবেই এই পদ্ধতি চালু করা সম্ভব৷ তবে, মুখ্যমন্ত্রী এও মনে করেন, এই পদ্ধতি অনুসরণ করা অসম্ভবের কিছু নেই৷ আলোচনার মাধ্যমে একটা সময়ে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে নিশ্চই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *