নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ সেপ্ঢেম্বর৷৷ শারদোৎসবের মুখেই চিনির স্বাদ কিছুটা তেতো হতে চলেছে৷ ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত রেশনে চিনির মূল্য ৪টাকা ৪০ পয়সা বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷ এবিষয়ে এদিন মহাকরণে খাদ্যমন্ত্রী ভানুলাল সাহা জানিয়েছেন, সম্প্রতি অক্টোবর ২০১৬ থেকে মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত চিনি সরবরাহের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে৷ সাম্প্রতিককালে খোলা বাজারে চিনির মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে বর্তমান টেন্ডারে চিনির সরবরাহ মূল্য আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে৷ অতিরিক্ত ব্যয়ভার লাঘব করতে আগামী অক্টোবর থেকে গণবন্টন ব্যবস্থায় চিনি সরবরাহ মূল্য কেজি প্রতি ৪টাকা ৪০ পয়সা করে বাড়ানো হচ্ছে যা আগামী মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে৷ ফলে, আগামী অক্টোবর থেকে গণবন্টন ব্যবস্থায় চিনি নিতে গেলে বাড়তি টাকা গুনতে হবে ভোক্তাদের৷
এদিকে, শারদোৎসব উপলক্ষ্যে আগরতলা পুর নিগম এলাকার অন্তর্গত ভোক্তাদের মাথাপিছু ৪০০ গ্রাম অতিরিক্ত চিনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে খাদ্য দপ্তর থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে৷ তাতে বর্ধিত পুর এলাকার ভোক্তারাও এই অতিরিক্ত চিনি পাবেন৷ এছাড়া রাজ্যের বাকি অংশের ভোক্তাদের মাথাপিছু ২৫০ গ্রাম অতিরিক্ত চিনি দেওয়া হবে৷ ভোক্তারা অক্টোবর মাসের নির্ধারিত চিনির সঙ্গে এই অতিরিক্ত চিনি রেশন দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন৷
এদিন মন্ত্রিসভায় রাজ্যের ২৯টি মাদ্রাসাতে কর্মরত ৩৭৪ জন মাদ্রাসা শিক্ষক যারা এসপিকিউএম কেন্দ্রীয় প্রকল্পে স্থির বেতনে কাজ করতেন তাদের এখন থেকে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তরে কর্মরত স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং অস্নাতক শিক্ষকের মত বেতনভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷ এছাড়া, ভেটেরিনারি কলেজের ৩৫টি শূন্যপদে প্রফেসর, এসোসিয়েট প্রফেসর এবং অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর টিপিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধীন হোমগুলিতে কর্মরত চারজন অ্যাসিস্টেন্ট নার্সকে নিয়মিত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ আগে এরা স্থির বেতনে কাজ করতেন৷ এদিন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভায় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তার পদটি সরাসরি টিপিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
এদিকে, রাজ্য সরকারের দ্বিচারিতার আরেকটি প্রমাণ রাজ্যবাসী আজ পেয়েছে বলে দাবি করল বিজেপি রাজ্য কমিটি৷ দলের তরফে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যে সরকার নিজেকে গরিবের সরকার বলে দাবি করে যে দল নিজেদের শ্রমিক দরদী বলে তারাই আজ সরকারি ন্যায্যমূল্যের দোকানে চিনির দাম ৪টাকা ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দিয়েছে৷ এই পুজোর মাসে রাজ্যের গরিব আম জনতার উপর সুকৌশলে রাজস্ব আদায়ের যে ফন্দি রাজ্য সরকার করেছে, তার তীব্র বিরোধিতা রাজ্য বিজেপি জানায়৷ রাজ্য বিজেপি রাজ্যের চিনির দাম নিয়ে আগেও তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করেছিল এবং রাজ্যের গরিব জনগণের স্বার্থে আবারও চিনির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করবে৷ রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব এই মর্মে আগামীকাল রাজ্য নেতৃত্বদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবে৷ তাছাড়া রাজ্য বিজেপি সভাপতি চাঁদার জুলুম থেকে রাজ্যবাসী রেহাই দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের নেওয়া উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়৷