BRAKING NEWS

বক্সনগরে জমি জবরদখল করতে মহিলাকে কুপিয়ে জখম, পুড়িয়ে দেয়া হল ঘর

নিজস্ব প্রতিনিধি, বক্সনগর, ১৯ সেপ্ঢেম্বর৷৷ জায়গা জবর দখক করার চেষ্টা ঘিরে মহিলাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে৷ attackkkkআগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়ি ঘর৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বক্সনগরের আশাবাড়ি এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷
সংবাদে প্রকাশ, বক্সনগর আর ডি ব্লকের অধীন সীমান্ত এলাকার গ্রাম আশাবাড়ি৷ ঐ গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা হাসেনা বেগম আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে গ্রামেরই রুপিয়া খাতুনের কাছ থেকে বসতবাড়ী তৈরীর জন্য পাঁচট গন্ডা জায়গা এক লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন৷ জায়গাটি ছিল ঢালু প্রকৃতির৷ অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে নিজ হাতে মাটি কেটে মাটির দেওয়ালের ঘর বানান হাসেনা বেগম৷ এতো বছর পর আশাবাড়ী গ্রামের মেহান মিয়া এক প্রকার দাবী করে বসেন হাসেনা বেগম যে রুপিয়া খাতুন থেকে পাঁচ গন্ডা জায়গা ক্রয় করেছিলেন সেই জায়গার মধ্যে নাকি মোহন মিয়ার তিন গন্ডা জায়গা রয়েছে৷ আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগে হাসেনা বেগমকে প্রচন্ড ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয় জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য৷ নানাভাব ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়ে৷ এমনকি প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়৷ কিন্তু অসহায় ঐ দরিদ্র মহিলা পেশা দিনমজুর৷ স্বামী বয়সের ভারে কাজ করতে পারেন না৷ তিনটি যুবতী মেয়ে নিয়ে বাঁচর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হাসেনা বেগম৷ চক্রান্ত করে রাতের অন্ধকারে হাসেনা বেগমকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে কানের লতি কেটে দেয় এবং পিটিয়ে জখম করে৷ রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়৷ এদিকে হাসেনা বেগম বাড়িতে ঘর তৈরীর জন্য কাঠমিস্ত্রী নিযুক্ত করেছেন৷ মোহন মিয়া ও তার সাকরেদরা বাড়িতে গিয়ে ঘর তৈরীতে বাধা দেয় এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন৷ পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ আকার নিতে পারে আশঙ্কায় তিনি কলমচৌড়া থানায় মামলা করতে যান৷ কিন্তু, মোহন মিয়া প্রভাবশালী হওয়ায় তৎকালীন সময়ে কলমচৌড়া থানার ওসি অমল চক্রবর্তী মামলা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ৷ পরবর্তী সময়ে বিচার পাওয়ার জন্য সোনামুড়া কোর্টে মামলা রুজু করেন হাসেনা বগেম৷ তারপরই গ্রামের শাসক দলের নেতারা হাসেনা বেগম ও মোহন মিয়াকে ডেকে এনে বলে গ্রামের শালিশী সভায় বিষয়টি মিমাংশা করা হবে৷ তাতে উভয় পক্ষের সম্মতি রয়েছে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়৷ হাসেনা বেগম সম্মতি দিলেও মোহন মিয়া অসম্মতি প্রকাশ করে৷ সে শালিশী সভার কোন সিদ্ধান্তকে মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন৷ শালিশী সভায় বিচার পাবেন বলে আশা করে হাসেনা বেগম মামলাটি তুলে নিয়েছিলেন৷ মামলা তুলে নেওয়ার পর মোহন মিয়া একশ আশি ডিগ্রী ঘুরে যায়৷ প্রথমে সে বলেছিল মামলা তুলে নিয়ে শালিশী সভার সিদ্ধান্ত মেনে নেবে৷ এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য যদি মোহন মিয়ার বিবাদ হয় তাহলে যিনি জায়গা বিক্রি করেছেন সেই রূপিয়া খাতুনের সাথে বিবাদ হবে, কেন হাসেনা বেগমের সাথে তার বিবাদ হচ্ছে৷ মারপিট করা হচ্ছে৷ ভয়ভীতি প্রদর্শন দেখানো হচ্ছে৷
অন্যদিকে ঈদের আগের দিন মোহন মিয়ার বাড়িতে যায় হাসেনা বেগমের একটি ছাগল৷ ছাগল কেন তার বাড়িতে গেল এই নিয়ে তুমুল ঝগড়া হয়৷ তানিয়া সুলতানা সুকলছাত্রীকে তিনজন মিলে বেধরক মারধর করে৷ হামলাকারীরা হল সাকির হোসেন, ইমান হোসেন সহ আরেকজন৷ তারা মোহন মিয়ার পরিবারের সদস্য৷ এদিকে গত রবিবার রাতে ওঠানের মধ্যে শব্দ শোনতে পেয়ে হাসেনা বেগম ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন তার রান্না ঘরে আগুন৷ তখন চিৎকার করেন হাসেনা বেগম৷ সঙ্গে সঙ্গেই আশেপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই ধারালো দা দিয়ে তাকে আঘাত করে দুসৃকতিরা৷ চিৎকার চেচামেচি শুনে আশাবাড়ী বিএসএফ ক্যাম্প থেকে জওয়ানরা ছুটে আসেন৷ স্থানীয় জনগণ ও বিএসএফ জওয়ানরা বহু চেষ্টা করে আগুন আয়ত্বে আনে৷ ততক্ষণে রান্না ঘরের সমস্ত জিনিষপত্র পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়৷ পরবর্তী সময়ে গোটা ঘটনা জানিয়ে কলমচৌড়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে৷ অন্যদিকে গুরুতর আহত হাসেনা বেগমকে বক্সনগর স্বাস্থকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *