BRAKING NEWS

মৃত্যু ফাঁদ

রাজ্যে প্রতিনিয়ত যান দূর্ঘটনা বাড়িয়া চলিয়াছে৷ পথ চলতি মানুষকে যেন প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়া চলিতে হয়৷ আসলে অনিয়ন্ত্রিত যান বাহনের কারণে এই দূর্ঘটনা বাড়িয়াই চলিতেছে৷ কখন কাহার প্রাণ ছিনাইয়া নিবে কে বলিতে পারে? এই শহর রাজধানীতে বালুর ও মাটির গাড়ীর বেপরোয়া এবং অদক্ষ চালক দিয়া চালানোর কারণে অকালে মরিতেছে পথচারিরা৷ মঙ্গলবার সাত সকালে অভয়নগরে একটি মাটি বোঝাাই বেপরোয়া ট্রাকের নীচে ছিটকাইয়া পড়েন বাইক আরোহী জনৈক মহিলা৷ তাহার স্বামী ও শিশু সন্তান ভাগ্যক্রমে বাঁচিয়া যায়৷ এই যখন ভয়ংকর পরিস্থিতি তখন মানুষ রাজপথে চলাফেরা করিবেন কিভাবে? দেশের অন্যান্য শহরে বা রাজ্যেও পরিসংখ্যান মোতাবেক ত্রিপুরায় জনসংখ্যার অনুপাতে দূর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অনেক বেশী৷ যদি তাহা সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার এই দূর্ঘটনা রোধে বা এই ঘটনা হ্রাসে কি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না? সরকার কি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দর্শক হইয়া থকিতে পারেন৷ রাজ্যে যান চালকদের মধ্যে প্রকৃত প্রশিক্ষণের অভাব৷ দূর্ঘটনা এড়াইবার ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে সম্পর্কে সরকারী আধিকারিকরাই যেখানে অজ্ঞ বা অন্ধকারে সেখানে যানবাহন চালকরা তো অতখানি দায়িত্বশীল হইয়া উঠিতে পারেন নাই৷ প্রশ্ণ হইতেছে, যানবাহন চালকদের যদি সচেতন ও দায়িত্ববান করিয়া তোলা না যায় তাহা হইলে সড়ক দূর্ঘটনা বাড়িয়া চলিবেই৷ চলিতে থাকিবে মৃত্যুর মিছিল৷ এমন কোনও দিন নাই যেদিন কোথাও না কোথাও মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটিতেছে না৷ পরিস্থিতি তো ভয়ংকর হইয়া উঠিয়াছে৷ এই অকাল মৃত্যু রোধ করা যাইবে কিভাবে? গভীরভাবে ভাবিবার সময় আসিয়াছে৷
পরিবহণের ক্ষেত্রে দু’চাকার মোটর সাইকেলের প্রয়োজনীয়তা কেহ অস্বীকার করিতে পারিবে না৷ কিন্তু, মোটর বাইকগুলির বেপরোয়া গতি সাধারণ পথচারীদের আতংকিত করিয়া তুলিয়াছে৷ এতটুকু অসতর্কতার কারণে মানুষের প্রাণ বলি হইয়া যাইতে পারে৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় ইহাই যে, কিছু উঠতি যুবকদের বেপরোয়া বাইক চালানোর ঘটনা সম্পর্কে আজ ভাবিবার সময় আসিয়াছে৷ এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশকে আরও বেশী কর্মসূচী নিতে হইবে৷ ত্রিপুরায় কত লক্ষ বাইক আছে, বোধহয় পুলিশ এমন কি ট্রাফিক বা পরিবহণ দপ্তরও বলিতে পারিবে না৷ বাইক বা যান বাহন চালানোর ক্ষেত্রে যে সরকারী কিছু কাগজপত্র থাকা বাধ্যতামূলক তাহার কেউ ধার ধারে না৷ আসলে, যান চলাচলের ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ন্ত্রণের, যখন ভঙ্গুর পরিণতি হয় তখনই দূর্ঘটনার সংখ্যা বাড়িতে থাকে৷ রাজ্য সরকারের পরিবহণ দপ্তর প্রতি বছর সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করিয়া থাকেন৷ অনুষ্ঠানে লম্বা চওড়া বত্তৃণতা চলে৷ ব্যস, বিপ্লব শেষ৷ সড়ক নিরাপত্তার বিষয় আজ কত বেশী গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিয়ত মানুষ জীবন দিয়া অনুভব করিতেছেন৷ এই ভাবে, এমন নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ বাঁচিতে পারে না৷ প্রতিনিয়ত যেন মৃত্যু দূত দন্ডায়মান৷ যেন যেকোনও সময় আছড়াইয়া পড়িয়া তছনছ করিয়া দিতে পারে৷
দূর্ঘটনা দূর্ঘটনাই৷ কখন আসিবে বলা যায় না৷ জানিয়া বুঝিয়াই আগুনে ঝাপ দিতেও তো দেখা যায়৷ পরিবহণ দপ্তর, ট্রাফিক পুলিশ যদি করিৎকর্মা না হয়, যানবাহনের দৌরাত্ম্য যদি সীমাহীন হয় সেখানে মানুষের দূর্ভোগের সীমা পরিসীমা থাকে না৷ তাহার উপর আছে ক্ষমতাসীন দলের শ্রমিক সংগঠন সিট্যুর দৌরাত্ম্য৷ তাহারা ট্রাফিক পুলিশকেই তোয়াক্কা করে না৷ বরং সিট্যু ভক্তদের হামলায় পালাইয়া আত্মরক্ষা করে ট্রাফিক পুলিশ৷ এই অবস্থাকে তো অরাজক বলাই যাইতে পারে৷ আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষাকারীই যদি প্রাণ বাঁচাইতে পালাইতে থাকে তাহা হইলে রাজপথ দূর্ঘটনামুক্ত হইবে কি করিয়া? সুতরাং আজ মানুষের প্রাণ রক্ষার জন্য যান দূর্ঘটনা রোধে কার্য্যকরী ব্যবস্থা নিতেই হইবে৷ সরকারকে ঝারিয়া কাশিতে হইবে৷ এইভাবে সত্যিই চলিতে পারে না৷ মানুষের জীবনের যেন কোনও মূল্যই নাই৷ সড়ক দূর্ঘটনার কারণে মানুষ যান বাহনে বা রাজপথে চলাচল করিতেই ভীত সন্ত্রস্ত হইয়া পড়ে৷ এইসব মানুষের জীবনের তো কানাকড়ি মূল্যও থাকিবে না৷ এখন তো এই ভয়ংকর অবস্থাই চলিতেছে৷ গভীর শংকা মানুষকে গ্রাস করিয়াছে৷ রাজ্যে যেভাবে সড়ক দূর্ঘটনা বাড়িতেছে তাহা রোধে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে জোরদার প্রয়াস নিতেই হইবে৷ সরকারকে আর দর্শক হইয়া থাকিলে চলিবে না৷ সড়ক দূর্ঘটনার নামে এই খুন কি রোধ করা হইবে না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *