BRAKING NEWS

এক যুগ অতিক্রান্ত, অপহৃতকে মৃত ঘোষণা করল পঞ্চায়েত

suicideনিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ২৯ জুন৷৷ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিদের দ্বারা অপহৃত হয়ে এক শ্রমিক আজও বাড়িতে ফিরে এল না৷ এমনি করে কেটে গেছে ১২ বছরের অধিক সময়৷ গোটা পরিবারের লোকজনরা এতটা বছর কাটিয়েছে হা পিত্যেসের মতো৷ এবার হিন্দু শাস্ত্র মোতাবেক ক্রিয়াকরণ করবে৷ এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা তেলিয়ামুড়া থানাধীন মাইগঙ্গা এলাকায়৷ এই বিদারক ঘটনাটির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিল আমাদের প্রতিনিধি৷ অপহৃতের আত্মীয় পরিজনদের সাথে কথাও বললেন এই প্রতিনিধি৷ আজও পরিবারের লোকজনদের চোখে অশ্রু পড়ছে অনবরত৷ ঘটনা ২০০১ সালে৷ ওই সময়টাতে ছিল জঙ্গিদের ছয়লাপ৷ পাহাড়ে গেলেই বারুদের গন্ধ পাওয়া যেত৷ তেলিয়ামুড়া থানাধীন মাইগঙ্গা এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত নকুল নমঃর ছেলে ভজন নমঃ অন্যান্য দিনের মতো সকাল সাতটা নাগাদ লাকড়ি সংগ্রহের জন্য তার সাথীদের নিয়ে মুঙ্গিয়াকামীর জুম বাড়ি জঙ্গলে গিয়েছিল৷ ওই কঠোর পরিশ্রমের পর ভজন তার সাথীদের নিয়ে জমুবাড়ির ২নং সেতুর উপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল৷ এতেই যত বিপত্তি ঘটে গেল ভজন নমঃ’র৷ জানা গেছে ২নং সেতুটির পাশের জঙ্গলে ওই সময় অবস্থান করছিল রাজ্যের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গিরা৷ জঙ্গিরা তাদের ধাওয়া করলে সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ভজন নমঃকে জঙ্গিরা ওই সময় অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল৷ এই অপহরণের খবর চাউর হতেই ভজনের পরিবারের লোকজনরা বহু খোঁজাখঁুজি করে টানা একমাস ধরে৷ পরে অপহৃত ভজনের পরিবারের লোকজনরা তেলিয়ামুড়া থানাতে একটি নিখোঁজের ডায়েরিও করেছিল ওই সময়৷
এর মধ্যে অপহৃতের ভাই ও পরিজনরা নগদ ৩০,০০০ টাকা দিয়েছিল মুঙ্গিয়াকামী এলাকার পদ্ম দেববর্মা, বিনয় দেববর্মা এবং মনোজ দেববর্মার কাছে ভজনকে জঙ্গি কবল থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য৷ কিন্তু টাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হল না৷ ভজন নমঃ আর ফিরে এল না৷ এই অপহরণের ব্যাপারটি তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ বহু চেষ্টা করেছিল ভজনকে উদ্ধার করার জন্য৷ সে দিক থেকেও বিফল হয় পুলিশ৷
পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে পদ্ম, বিনয়, মনোজ দেববর্মার বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে গ্রেপ্তারও করেছিল৷ বর্তমানে তারা জেলবন্দি৷ এদিকে ভজন অপহৃত হয়েছে প্রায় ১২ বছরের অধিক সময় কেটে গেছে৷ অবশেষে এলাকার পঞ্চায়েত এই বিষয়টি নিয়ে এক সভা করে৷ এই সভাতে সিদ্ধান্ত হয় ভজনের মৃত্যু হয়েছে ধরে নিয়ে তার দুই ছেলে হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে ক্রিয়াকরণ করতে হবে৷ নতুবা পাছে সমাজ ব্যবস্থার অকুত ভয়৷
সে হিন্দুশাস্ত্র বিধি মেনে ২৭ জুন মাইগঙ্গা এলাকায় অপহৃত ভজন নমঃ’র কুশপুতুল পোড়ায় তার দুই ছেলে৷ পরিবারের লোকজনরা জানায় আগামী বৃহস্পতিবার ভজনের শ্রদ্ধানুষ্ঠান হবে নিজ বাড়িতেই৷
পরিবারের লোকজনরা জানায় সরকারি সাহায্য সহায়তা বলতে ভজনের স্ত্রী লক্ষ্মী নমঃকে একটি সরকারি চাকুরি দেওয়া হয়েছে৷ পূবের্ব ভজন নমঃ’র সংসার চলত লাকড়ি সংগ্রহের অর্থ দিয়েই৷ আজ এই অন্তিম দিনে পরিবারের আত্মীয়স্বজনরা কথা বলতে গিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে যাচ্ছিলেন৷ তবে ভজন নমঃকে কি সত্যিই মেরে ফেলেছিল? এমন প্রশ্ণ থেকেই যাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *