BRAKING NEWS

কঠিন চ্যালেঞ্জে কংগ্রেস

tripura-congressঘুরিয়া দাঁড়াইবার মরিয়া চেষ্টা করিয়া সাফল্য কতখানি মিলিবে তাহা রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা কতটা আন্দাজ করিতে পারিতেছেন বলা মুশকিল৷ সুদীপ বর্মনের নেতৃত্বে সারা রাজ্যে বিদ্রোহের যে আগুন জ্বালাইয়া দেওয়া হইয়াছে সেখানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা কতখানি জল ঢালিতে সক্ষম হইবেন, এই প্রশ্ণ উঠিয়াছিল৷ কংগ্রেসের লিডারশিপ ক্যাম্পে কংগ্রেসের জীতেন সরকার ও দিলীপ সরকার হাজির থাকিয়া কার্য্যত বীরজিতের নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করিলেন৷ কংগ্রেসের এই প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা রতন লাল নাথও উপস্থিত থাকিয়া কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্যর ঘটনায় কার্য্যত সুদীপ বর্মনের বিদ্রোহের ঘটনায় হোঁচট খাইল বলা যাইতে পারে৷ প্রাক্তন বিরোধী দলনেতার পদে ইস্তফা দেওয়ার পর দল তাঁহাকে বরখাস্ত করায় তিনি নিজে দলত্যাগ বিরোধী আইনের কোপে পড়েন নাই৷ তাঁহার বিধায়ক পদ খারিজ হয় নাই৷ কিন্তু তাঁহার বিদ্রোহী সাথী বিধায়করা তো এখন মহাসংকটে৷ অন্তত সাতজনকে নিয়া দলত্যাগ করিলে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিধায়ক পদ খারিদ হয় না৷ কংগ্রেসের দশজন বিধায়কের মধ্যে রতন লাল নাথ সুদীপের দলে নাই৷ বীরজিতের সঙ্গে আছেন দিলীপ সরকার ও জীতেন সরকার৷ সোজা কথায় সুদীপ বিরোধী শিবিরে বিধায়ক আছেন পাঁচজন৷ সুতরাং দলত্যাগ বিরোধী আইন বাঁচাইয়া বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা দল ছাড়িতে না পারার ঘটনা নতুন করিয়া সংকট আনিয়া দিল৷ যদি তাহারা দল হইতে ইস্তফা দেন বা অন্য দলে যোগ দেন তাহা হইলে তাহাদের বিধায়ক পদ খারিজ হইয়া যাইবে৷ এই পরিস্থিতির মুখে দাঁড়াইয়া সুদীপ, আশীষ সাহাদের তো রাতের ঘুম উধাও হইবার যোগার৷
উনিশে মে সেই মহালগ্ণ আসন্ন৷ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী ফলাফলের দিকেই নজর৷ নির্বাচনী ফলাফলে যদি তৃণমূল কংগ্রেস সাফল্য পায় তাহা হইলে ত্রিপুরার রাজনীতি নতুন পথে হাটিতে পারে৷ আগামী দিনে ত্রিপুরায় কংগ্রেস-সিপিএম জোট হইবার তাগিদও আসিতে পারে৷ সিপিএম কংগ্রেস জোট মন্ত্রিসভা গঠিত হইলে আশ্চর্য্যের থাকিবে না৷ ত্রিপুরায় সিপিএমের যে শক্ত ঘাঁটি রহিয়াছে সেখানে বিজেপি বা তৃণমূল তেমন ধাক্কা দিতে পারিবে না৷ তবে, কিছুটা হইলেও নাড়া দিতে পারিবে৷ সেই সন্ধিক্ষণে এই ত্রিপুরায় কংগ্রেস সিপিএম জোটের সম্ভাবনা দেখা দিতেই পারে৷ এখনও যাহারা কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন, তাঁহারা নিশ্চয়ই আগামী দিনের রাজনীতির সম্ভাবনা কোন্ পথে তাহা নিয়া ভাবনা চিন্তা করিতেছেন৷
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী ফলাফলই কার্য্যত আগামী দিনে ত্রিপুরার রাজনৈতিক ভাগ্য লিখন হইয়া যাইবে৷ সুদীপ রায় বর্মনরা কংগ্রেসের বুকের পাঁজর অনেকটাই ভাঙ্গিয়া দিয়াছে৷ এখন প্রাচীন এই জাতীয় দলকে শক্তিশালী ভিতের উপর দাঁড় করানো যে অনেক কঠিন কাজ সে বিষয়ে সন্দেহ নাই৷ বিদ্রোহের কারণে দলের যে ক্ষতি হইয়াছে তাহা অপূরণীয়৷ এরাজ্যে কংগ্রেসের দীর্ঘ রাজনৈতিক ঐতিহ্য আগামী দিনে যে উলট পালট হইয়া যাইবে সেই সম্ভাবনাই প্রবল৷ একথা তো অস্বীকার করিবার সুযোগ নাই যে, ত্রিপুরায় কংগ্রেস দল পল্লবিত হইয়াছে সিপিএম বিরোধীতা হইতে৷ এখন যদি এই দল সিপিএমের সঙ্গে মিতালী করে তাহা হইলে দলের প্রাণশক্তি ধরিয়া রাখিতে পারিবে? পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি ত্রিপুরায় কংগ্রেস দলকে যে ধাক্কা দিয়াছে তাহা সামাল দেওয়া কঠিন কাজ সন্দেহ নাই৷ দলের প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ গ্রহণকারীরা রাজ্যকে কতখানি প্রভাবিত করিতে পারিবে সেই প্রশ্ণ আছে? দলের পিছনে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা কিভাবে ছুটিবেন? সেই জনস্রোত কি কংগ্রেস দেখাইতে পারিবে? আগামী দিনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনেই দাঁড়াইতে হইবে, কংগ্রেসকে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *